
ছবিঃ জনকণ্ঠ
গভীর সমুদ্র থেকে জেলেরা মাছ শিকার করে নিয়ে আসেন এই ফিশারি ঘাটে। মাছ বোঝাই ট্রলার ঘাটে ভিড়লেই শুরু হয়ে যায় হাঁকডাক, সেই সঙ্গে বাড়ে মাছ ব্যবসায়ীদের জটলা। শুরু হয় বিকিকিনির ধুম।
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে শুরু হয়ে যায় বিশাল কর্মযজ্ঞ। একদিকে যেমন জমে ওঠে মাছ বেচাকেনা, অপরদিকে চলে বরফ দিয়ে মাছ সংরক্ষণের প্রস্তুতি। মাছ সংরক্ষণের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে কোল্ড স্টোরেজও।
সরেজমিনে কক্সবাজার ফিশারি ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকেই ফিশিং বোটগুলো ঘাটে ভিড়তে থাকে। এরপর শ্রমিকরা বোট থেকে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ খাঁচায় করে বহন করে আড়তে নিয়ে আসেন। অনেক ব্যবসায়ী এসব মাছ বিদেশেও রপ্তানি করেন। ক্রেতাদের হাতে সমুদ্রের তাজা মাছ তুলে দিতে কক্সবাজার জেলার খুচরা বিক্রেতারাও এখানে এসে মাছ সংগ্রহ করেন।
কক্সবাজার ফিশারি ঘাট থেকে সংগৃহীত মাছ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এখানে লাক্ষা, ইলিশ, কই কোরাল, দাতিনা কোরাল, রেড স্ন্যাপার, ভেটকি, সুরমা, কাটলফিশ, দেশি স্কুইড, রূপচাঁদা, ম্যাকারে, শ্রিম্প, টুনা, স্যামন, ম্যাকরেল, সারডিন, স্কুইড, লবস্টার, টুনা কড, ছুরি, পোপা, ফাইস্যা, লইট্যা, চিংড়ি, চাপা, চাপিলা, রিকসাসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি বার্মিজ মাছ, মিঠা পানির রুই, কাতলা, বোয়াল, কই, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির চাষের মাছও পাওয়া যায়।
তবে ইলিশসহ অধিকাংশ সামুদ্রিক মাছের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহে রয়েছে ঘাটতি। ফলে পাইকারি বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সামুদ্রিক মাছের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী সরবরাহ বাড়েনি। অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ ঘাটে ঘোরাঘুরি করেও ক্রেতাকে দ্বিগুণ দামে মাছ কিনতে হয়।
মনোয়ার নামে এক পাইকারি সামুদ্রিক মাছ বিক্রেতা জানান, প্রতি কেজি চান্দা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা, লইট্যা মাছ পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। খুচরা বাজারে এসব মাছ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া প্রতি কেজি কোরাল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, সামুদ্রিক পাঙ্গাস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে।
ফিশারি ঘাটে কম দামে মাছ পাওয়া যাবে এই আশায় মাছ কিনতে আসা বশিরুল আলম নামে এক ক্রেতা বলেন, “অনেক আশা নিয়ে ভোরে ফিশারি ঘাটে এসেছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ সরবরাহ না থাকায় বিক্রেতারা মাছ কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করছেন।”
আলীম