ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

বিয়ের মাঝেই মৃত্যু, লাশ দাফনে বাঁধা দিল প্রতিবেশী!

ইসমাইল হোসেন সজীব, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, চাটখিল, নোয়াখালী।

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ১৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৯:২৯, ১৪ জুন ২০২৫

বিয়ের মাঝেই মৃত্যু, লাশ দাফনে বাঁধা দিল প্রতিবেশী!

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার দক্ষিণ রামনারায়ণপুরের মাইন উদ্দিন বেপারী বাড়িতে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। শনিবার (১৪ জুন) একদিকে ঘরজুড়ে বিয়ের আনন্দ, অন্যদিকে পাশের কক্ষে পড়ে আছে এক প্রিয়জনের নিথর দেহ। তবুও মানবিকতা হার মানলো কারণ, মৃত্যুর পরেও সেই লাশ নিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রতিবেশী।

জানা গেছে, ওই বাড়ির জহিরুল ইসলাম (৫৫) দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর শনিবার সকালেই মৃত্যু বরণ করেন। কিন্তু মৃত্যুর আট ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও লাশ দাফনে নেওয়া যায়নি কারণ, প্রতিবেশী বিয়ের আয়োজনের অজুহাতে বন্ধ করে রেখেছেন চলাচলের একমাত্র পথটি। এমনকি বরই গাছের কাটা ঢাল ফেলে রাখা হয়েছে রাস্তায়, যাতে লাশ বহন সম্ভব না হয়।

পরিস্থিতির বর্ণনায় স্থানীয়রা বলেন, “এক মিনিটের পথ ঘুরে লাশ নিয়ে যেতে হয়েছে ত্রিশ মিনিটে। এটা শুধু দুঃখজনক না, এটা একেবারে অমানবিক।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা নূরনবী দফাদার ও তার স্ত্রী মরিয়ম নেছা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রায় ৩০টি পরিবারের চলাচলের রাস্তায় নানা রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আসছেন। স্থানীয়ভাবে বহুবার শালিস হলেও তারা মানেননি কোনো সিদ্ধান্ত।

রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বাহার বলেন, “আমরা একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছি। এমনকি ভূমি অফিস থেকেও রায় হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত মানছেন না। বরং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন।”

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, এই রাস্তাটি শুধু ব্যক্তি চলাচলের জন্য নয় এটি একটি প্রাইমারি স্কুল, একটি নূরানী মাদ্রাসা, একটি মসজিদ ও ইউনিয়ন পরিষদের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পথ। এমন অবরোধে তারা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন এবং দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।

মিমিয়া

×