
নীলফামারী সদর উপজেলার চাড়ালকাটা নদীতে উজানের ঢলের সঙ্গে ভেসে আসা কচুরিপানা ওই কটুকাটা সেতু এলাকায় এসে আটকে গেছে। যা জমাট বেঁধেছে। এর ওপর দিয়ে হেঁটে নদী পারপার হচ্ছে মানুষ। এই দৃশ্য দেখতে সেখানে ভিড় জমিয়েছে শতশত নারী পুরুষ ও শিশু। শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরের পর সেতুর দুই দিকে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। সবার চোখ নদীর দিকে। মানুষ ওই জমাট বাঁধা কচুরিপানার ওপর দিয়ে হেঁটে নদী পারাপার হচ্ছেন। যা উৎসুক লোকজনের ভিড় বাড়িয়ে দেয়।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নীলফামারী-জলঢাকা ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলার সড়কের পাশে সদরের কচুকাটা ইউনিয়ন। সড়কের ওপরে রয়েছে সেতু ও চওড়া পাকা সড়ক। সেখানেই এমন চিত্র । অনেকে মাঝনদীতে কচুরিপানার ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, ভিডিও করেছেন, কেউ কেউ আবার করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ। সেতু ও সড়কের ওপর লোকজনের পাশাপাশি রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলের সারি দেখা যায় । যা সেতু ছেড়ে শখ করে কচুরিপানার উপর দিয়ে বার বার যাওয়া আসা করছে।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন দিন আগে উজানের ঢলে ভেসে আসা কচুরিপানা চাড়ালকাটা নদীর কচুকাটা সেতুর উত্তর পাশের ২০০ মিটার অংশে নদীর দুই তীরে জমাট বাঁধে। ওই অংশে নদীর গভীরতা ১০ থেকে ১২ ফুট। পানির স্রোত নিচ দিয়ে বহমান থাকলেও কচুরিপানাগুলো আর নদীর ওই অংশ থেকে না সরায় স্থানীয় কিছু শিশু-কিশোর ফুটবল খেলে এবং কচুরিপানার ওপর দিয়ে হেঁটে নদী পার হয়। এ ঘটনা সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন তা দেখতে ছুটে আসেন। হাজারো মানুষের ভিড় দেখে অনেক পথচারীও সেখানে দাঁড়িয়ে জমাট বাঁধা কচুরিপানার ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন।
কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরী বলেন, কচুরিপানার ওপর দিয়ে হেঁটে নদীর পার হচ্ছেন, এমন ঘটনা শুনে আমি নিজেও এখানে এসেছি। নদীর প্রায় ২০০ মিটার এলাকায় কচুরিপানা জমাট বাঁধায় লোকজন তার ওপর দিয়ে হেঁটে নদী পারপার হচ্ছেন, ছেলের দল ফুটবল খেলছে। তা দেখতে হাজারও মানুষ নদীর তীরে ও সেতুর ওপর ভিড় করছেন। ওই এলাকাটি ইউনিয়নের মহব্বত বাজিতপাড়া হিসাবে পরিচিত। এলাকার চাড়ালকাটা নদীতে তৈরি হয়েছে ভাসমান কচুরিপানার ব্রিজ। সেখানে সতর্কতা জারী করেছি। কচুরিপানার ব্রিজটি কোনো স্থায়ী বা নিরাপদ সেতু নয়। হঠাৎ সরে যাওয়া বা পা পিছলে নদীতে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি। শনিবার (২৪ মে) সকালে কিছু লোককে কচুরিপানার বাঁধা জমাট ভেঙে দেওয়ার জন্য লাগিয়ে দেওয়া হবে। কারণ যে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে প্রাণহানির আশংঙ্কা থাকে।
টেঙ্গনমারী পোড়াকোট গ্রামের মানুষজনের মধ্যে কচুরিপানার ওপর দিয়ে নদী পার হওয়া দেখতে আসা আর্জিনা খাতুন(৫০) বলেন, এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ায় দেখতে এসেছি। এটা বিরল ঘটনা। এর আগে আমরা ভাসমান কচুরিপানার ওপর দিয়ে হেঁটে নদী পার হতে দেখিনি। তাই আজ দেখতে এলাম। এখানে প্রচুর মানুষের ভিড়।
রাজু