
ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া এলাকার ঢাকা- সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ৪০০ বছর পুরনো প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা বাড়িউড়া প্রাচীণ পুল। যেটি হাতিরপুল নামেই পরিচিত।
তবে গত কয়েক বছর যাবত একদল মানুষ এটিকে পাখি বাবার মাজার পরিচয় দিয়ে ধোঁকায় ফেলছে সাধারণ মানুষদের। দূরদূরান্ত থেকেও লোকমুখে শুনে অনেকেই এখন এটিকে মাজার মনে করে ছুটে আসেন বিভিন্ন মানত-এর উদ্দেশ্যে। মনের আশা পূরণ হওয়ার আকাঙ্খায় রেখে যাচ্ছে নগদ অর্থ'সহ অনেককিছুই।
অথচ সরকারি তথ্য বাতায়ন ও উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, ১৬'শ শতাব্দীতে তৎকালীন দেওয়ান শাহবাজ খান দেওয়ানি লাভের পর বর্তমান শাহবাজপুরে তার কাচারি নির্মাণ করেন। তার নিবাস সরাইলে হওয়ার কারণে শাহবাজপুরে যাতায়াতের জন্য সরাইল থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত আনুমানিক ১৬৫০ সালে তিনি একটি রাস্তা নির্মাণ করেছিলেন।
বর্তমানে পরিত্যক্ত রাস্তাটি কুট্টাপাড়ার মোড় হতে শাহবাজপুর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে, যেটি স্থানীয়দের কাছে জাঙ্গাল নামে পরিচিত। মূলত তখনকার দেওয়ানগণ এই পথে হাতির পিঠে করে চলাচল করতেন এবং পুলটির গোড়ায় হাতি সমেত প্রায়শই বিশ্রাম গ্রহণ করতেন বলে এটিকে হাতিরপুল নামে পরিচিতি লাভ করে।
দীর্ঘদিন জঙ্গলবেষ্টিত থাকলেও প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর ২০১৯ সালে প্রত্ন সম্পদ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে ঐতিহাসিক এ পুলটি'কে।
উল্লেখ্য, প্রাচীণ এই পুলটির ইতিহাস, ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মের কাছে অনেকটাই অজানা। এদিকে একেবারে প্রকাশ্যেই চলছে জমজমাট মাজার ব্যবসা। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে একদিকে যেমন প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ অন্যদিকে হাতিরপুলের ইতিহাস দূরে সরে যাচ্ছে জনসাধারণের কাছ থেকে।
আলীম