ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যশোরে হ্যান্ডকাফ ভেঙে পালাল খুনি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস 

প্রকাশিত: ২১:৪১, ১৮ মে ২০২৫

যশোরে হ্যান্ডকাফ ভেঙে পালাল খুনি

ছবি: জনকণ্ঠ

যশোর জজ আদালতের হাজতখানায় নিয়োজিত পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাফ ভেঙে হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দুপুর দুইটার দিকে।

পলাতক আসামি জুয়েল খান মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। তিনি একই উপজেলার হরিশপুর গ্রামের ইজিবাইকচালক আল-আমিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি।

২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাগুরা থেকে আল-আমিনের ইজিবাইক ভাড়া করে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে এনে তাকে হত্যা করা হয় এবং ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যায় জুয়েলসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় মামলা হয়।

২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর র‌্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল টিম মামলার চার আসামিকে আটক করে এবং তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। এরপর তাদের বাঘারপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেদিন থেকেই জুয়েল কারাগারে ছিলেন।

আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, মামলার রবিবার ছিল ধার্য তারিখ। এদিন সকালে আসামি জুয়েল ও হারুন অর রশিদকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে তাদের হাজির করা হয়। আদালত তাদের ফের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর মহিলা পুলিশ কনস্টেবল সোনালী তাদের দুজনকে নিয়ে হাজতখানার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সিঁড়ির কাছে পৌঁছালে হঠাৎ কৌশলে জুয়েল হ্যান্ডকাফ ভেঙে পালিয়ে যায়। কনস্টেবল সোনালী চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন পিছু ধাওয়া করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুয়েল আদালতের সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে মসজিদের সামনে দিয়ে দৌড়ে আইনজীবী সহকারী সমিতির পাশ দিয়ে খড়কির দিকে চলে যায়।

ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আবুল বাসার, কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালতে ছুটে যান। একাধিক পুলিশ টিম জুয়েলকে খুঁজতে অভিযানে নামে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ তাকে ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন বলেন, “জুয়েলকে খোঁজা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘটনার সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর ইজিবাইক ভাড়া করে খুনিরা চালক আল-আমিনকে বুধোপুর গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। টাকা ও ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায় খুনিরা। পরদিন পুলিশ আল-আমিনের লাশ উদ্ধার করে এবং ইজিবাইকও উদ্ধার হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাঘারপাড়া থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্তে র‌্যাব সদস্যরা জুয়েল খান, হারুন অর রশিদ, মো. রাসেলসহ চারজনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে আল-আমিনের ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।

২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষে এসআই হরষিত রায় আসামি জুয়েল খান ও হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটির বিচারকার্য চলছে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে। ঠিক এই ধার্য তারিখেই ঘটে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা।

শহীদ

×