
ছবি: জনকণ্ঠ
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ছয়টি বিচ্ছিন্ন ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষ পৃথক ‘যমুনা উপজেলা’ গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।
রবিবার (১৮ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্তাবিত যমুনা উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে উপজেলা সদরের অবস্থান হওয়ায় পূর্ব পাড়ের বাসিন্দাদের নৌকায় নদী পেরিয়ে যেতে হয়। এতে সময়, অর্থ এবং জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে মামলা-মোকদ্দমার মতো কাজ থাকলে আগের দিনই রওনা হতে হয়। অথচ সরকারি কোনো লঞ্চ বা নৌযান নেই, যার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা সর্বক্ষণ থাকে।
তারা আরও জানান, পূর্ব পাড়ের মানুষের কৃষিজ উৎপাদন বেশি হলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং ও সরকারি সেবায় রয়েছে বড় ধরনের বৈষম্য। কাজীপুর উপজেলার ১৪টি কলেজের মধ্যে পূর্ব পাড়ে মাত্র ২টি, ১৪টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবকটিই পশ্চিম পাড়ে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ৫৬টির মধ্যে মাত্র ১৪টি পূর্ব পাড়ে। এছাড়া ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৯টি এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ৪টি হাসপাতালের সবকটিই পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত।
দাবি জানানো ছয়টি ইউনিয়ন হলো—মুনসুরনগর, নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর ও চরগিরিশ। এই ইউনিয়নগুলো যমুনা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজীপুর উপজেলার মোট ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি পশ্চিম পাড়ে ও বাকি ৬টি পূর্ব পাড়ে। নদী মাঝখানে থাকায় পূর্ব পাড়ের মানুষ উপজেলা সদরসহ প্রশাসনিক সেবা পেতে দুর্ভোগে পড়েন।
বক্তারা বলেন, পূর্ব পাড়ের ছয়টি ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ও জীবনযাত্রা সরিষাবাড়ী উপজেলার সঙ্গে অনেক সহজ। তাই এই ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে নতুন ‘যমুনা উপজেলা’ গঠন করা হলে স্থানীয়দের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদুল ইসলাম, সাবেক জনপ্রতিনিধি আবদুল কাদের, কবি আলতাফ হোসেন, সিরাজগঞ্জ পলিটেকনিক সিটির পরিচালক জহুরুল ইসলাম লিটন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক ফরিদুল হক, প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম ও প্রকৌশলী সুমন মিয়া। এছাড়াও সংহতি জানান বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এবং সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি হারুন অর রশীদ খান হাসান।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “এই দাবি সম্পর্কে আমি আগে থেকেই অবগত। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
শহীদ