ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর সয়াবিন লুট ঠেকাতে রায়পুরে এএসপির নেতৃত্বে সচেতনতামূলক মহড়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর। 

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ৭ মে ২০২৫; আপডেট: ২০:০০, ৭ মে ২০২৫

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর সয়াবিন লুট ঠেকাতে রায়পুরে এএসপির নেতৃত্বে সচেতনতামূলক মহড়া

চরাঞ্চলের কৃষকরা যখন ফসল তুলতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, ঠিক তখনই আশার আলো জ্বালালেন রায়পুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিললু হক।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া ও বায়রাঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র কৃষকদের জমি থেকে জোরপূর্বক সয়াবিন লুট করে নিচ্ছে—এমন অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। এতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকার প্রকৃত কৃষকরা। ফসল ফলিয়েও সেই ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না তাঁরা। এই সংবাদ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর এই ভয়াবহ অবস্থার অবসান ঘটাতে এবার মাঠে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন।

৭ মে (বুধবার) সকাল থেকে এএসপি জামিললু হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম চরাঞ্চলে সচেতনতামূলক মহড়া ও পথসভা পরিচালনা করে। খেয়াঘাট ও বায়রাঘাট এলাকায় অনুষ্ঠিত এই কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণ, গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়াসহ থানার ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য অংশ নেন।

এএসপি জামিললু হক এর পথসভায় স্পষ্ট বার্তা দেন “কোনোভাবেই কৃষকের ঘাম ঝরানো ফসল লুট করতে দেওয়া হবে না। প্রকৃত কৃষকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় পুলিশ কঠোরভাবে কাজ করবে। কৃষকের পাশে আমরা আছি এবং থাকব।”

তিনি আরও জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত টহল ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এলাকার শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

স্থানীয় কৃষকদের মতে, এই পুলিশি উদ্যোগ তাঁদের নতুন করে সাহস ও আশার আলো দেখিয়েছে। চরকাছিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ফসল তুলতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছি। একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ৫ আগস্টের পর থেকে জমি দখল করে আমাদের সয়াবিন লুটে নিচ্ছে। পুলিশ এভাবে পাশে দাঁড়ালে আমরা আমাদের ফসল রক্ষা করতে পারব।”

রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, পুলিশ জনগণের বন্ধু হিসেবেই কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও কৃষকদের পাশে থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

এই মহড়া শুধুই প্রতীকী কোনো অভিযান নয়—এটি একটি বার্তা, যে রাষ্ট্র তার কৃষকদের রক্ষা করতে প্রস্তুত। এমন মানবিক, সাহসিকতাপূর্ণ ও সময়োপযোগী উদ্যোগে রায়পুরের সাধারণ মানুষ যেমন আশাবাদী, তেমনি সারাদেশের জন্য এটি হয়ে উঠতে পারে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

চরের কৃষকরা এখন শুধু সয়াবিন নয়, ফিরিয়ে পাচ্ছেন বিশ্বাস, নিরাপত্তা আর জীবনের স্থিতি।
 

রিফাত

×