হাসপাতাল কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দালালচক্র নির্মূলে র্যাবের অভিযান
রাজধানীর হাসপাতাল কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দালালচক্র নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সকাল থেকে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানা এলাকার ৪টি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই দালাল হিসেবে চিহ্নিত।
বুধবার র্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ নাজমুল্লাহেল ওয়াদুদ জানান, র্যাব মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করছে। দালাল চক্র হিসেবে যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ও জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। এদিন সব মিলিয়ে ৪২ জনকে আটক করা হয। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আওতায় আনা হচ্ছে। বেলা এগারোটা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ১৭ জন, শিশু হাসপাতাল থেকে ৪ জন দালাল আটক ধরা পড়েছে। পঙ্গু হাসপাতাল থেকেও আটক করা হয়েছে।
ওয়াদুদ বলেন, র্যাব দেশজুড়ে অনিয়ম রোধে কাজ করে যাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় আজ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, হৃদ্রোগ হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে র্যাব-২ এর পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। আমরা জানতে পেরেছি, রোগীরা যখন হাসপাতালে প্রবেশ করেন তখন দালালরা তাদের টার্গেট করেন এবং পিছু নেন। এরপর রোগীদের বোঝানো হয় এখানে ভালো ডাক্তার নেই, চিকিৎসা নেই। এসব বলে তাদের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি বলেন, রোগীরা যখন ডাক্তার দেখিয়ে চেম্বার থেকে বের হন তখন এই দালালরা জোর করে প্রেসক্রিপশনটা নিয়ে তার ছবি তোলেন। এসবের ভিডিও ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। দালালরা দেখে যে ডাক্তাররা তাদের টার্গেট দেওয়া ওষুধ লিখেছেন কি না। এ ছাড়া তারা রোগীদের বাইরে যেসব ডাক্তারদের কাছে নিয়ে যান তাতে বিভিন্ন সময়ে ভুল চিকিৎসার ফলে মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটে।
আমরা চাই প্রাইভেট হাসপাতালের এসব দৌরাত্ম্য বন্ধ হোক এবং সরকারি হাসপাতালের যে এজেন্ডা তা বাস্তবায়ন হোক। হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে ১২ জন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ১৮ জন, শিশু হাসপাতাল থেকে ৪ জন ও পঙ্গু হাসপাতাল থেকে ৫ জন দালালকে আটক করা হয়েছে। তাদের ইতিমধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমাদের এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোগী ও তাদের স্বজনদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি হাসপাতাল থেকে বের করে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে বেশি বিল করে কমিশন বাণিজ্য করা হচ্ছে। পাশাপাশি সকল ধরনের টেস্ট সরকারি হাসপাতালে হলেও দালাল ও কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে সেসব করা হচ্ছে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম।