ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিভোর্সের প্রতিশোধ নিতে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদন্ড

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর 

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ১ ডিসেম্বর ২০২২

ডিভোর্সের প্রতিশোধ নিতে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদন্ড

স্ত্রীকে খুনের দায়ে মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী শরিফুল

গাজীপুরে ডিভোর্স দেয়ার প্রতিশোধ নিতে গার্মেন্টসকর্মী স্ত্রীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে খুন করেছে তার স্বামী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগম জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় প্রদান করেন। 

ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে শরিফুল আলম (৪৭)। তিনি নীলফামারী জেলা সদর থানার রামকলা এলাকার মৃত নূর আলমের ছেলে।

গাজীপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি মকবুল হোসেন কাজল জানান, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ সুলতান মার্কেট এলাকার হাজী রুহুল আমীনের কলোনীর ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় জিএমএস গার্মেন্টস কারখানায় চাকুরি করতেন মোহছেনা বেগম (৩৫)। 

তিনি রংপুরের পীরগাছা থানার সৈয়দপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের মেয়ে। একই কারখানায় ডেইলী লেবার হিসেবে কাজ করতেন মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে শরিফুল। একই কারখানায় চাকুরির সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর স্ত্রী মোহছেনা জানতে পারেন স্বামী শরিফুল পূর্বে বিবাহ করেছেন এবং তার চারটি সন্তান রয়েছে। 

এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে থাকতো। এক পর্যায়ে মোহছেনা তার স্বামী শরিফুলকে ডিভোর্স দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শরিফুল বিভিন্ন সময়ে মেহেছেনাকে খুন জখমের ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। রাতের ডিউটি শেষে গত ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর সকালে বাসায় ফিরেন মোহছেনা। 

তিনি আসার পরপরই শরিফুল ওই বাসায় আসে। এসময় ডিভোর্সের প্রতিশোধ নিতে মোহছেনাকে বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে খুন করে। হত্যার পর শরিফুল ঘরের দরজা আটকিয়ে ভিতরে অবস্থান করে। ঘটনার সময় মোহছেনার ডাক চিৎকারে আশোপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তারা ডাকাডাকি করলেও ভিতর থেকে দরজা খুলছিলনা ঘাতক।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ভিতরে প্রবেশ করে রক্তভেজা কাপড় পরিহিত শরিফুলকে আটক করে। এসময় পুলিশ নিহতের লাশ এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বটি ও চাকু উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদি হয়ে জিএমপি’র কাশিমপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ে করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই থানার এসআই দীপঙ্কর রায় ২০২১ সালের ১০ মার্চ আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে শরিফুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালত দীর্ঘ শুনানী ও ১৫জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার মামলার একমাত্র আসামি মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে শরিফুলকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষণাকালে আসামি শরিফুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

রাস্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত পিপি মকবুল হোসেন কাজল। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফারহানা খানম। 

 

 

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×