ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

’হেয়ার ক্যাপ’ এ স্বাবলম্বী গাইবান্ধার নারী

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ২৮ অক্টোবর ২০২২

’হেয়ার ক্যাপ’ এ স্বাবলম্বী গাইবান্ধার নারী

স্বাবলম্বী নারী

পরের চুল দিয়ে ‘হেয়ার ক্যাপ’ তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে গাইবান্ধার নারীরা। এ জন্য গাইবান্ধার খামার বোয়ালীতে গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিকভাবে পরচুলা বা ‘হেয়ার ক্যাপ’ তৈরি কারখানা। 

সেখানে দুইশত ৫০ জন বেকার শিক্ষার্থী, গৃহবধু ও অসহায় দরিদ্র নারীরা কাজ করে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছে। আর তাদের হাতের কারিশমায় তৈরি হওয়ায় ‘হেয়ার ক্যাপ’ চীনসহ মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। 

সদর উপজেলার খামার বোয়ালী গ্রামের নারীরা বাড়িতে বসে না থেকে তারা নিজে উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছে। অভাবী এ পরিবারের মহিলারা পরচুলা তৈরির কারখানায় কাজ পেয়ে বদলে দিয়েছে তাদেও জীবনচিত্র। শিক্ষার্থী, গৃহবধু ও অসহায় দরিদ্র নারীরা নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে বদলে দিয়েছেন এ গ্রামের অর্থনীতির চাকা।

শুধু খামার বোয়ালী নয়, এ উপজেলার বাদিয়াখালী ও তিনমাইল নামক স্থানে পরচুল বা ‘হেয়ার ক্যাপ’ তৈরি কারখানা স্থাপন করেন দিনাজপুরে রাজ আহম্মেদ। এমএস মমতা হেয়ার প্রোসেসিং কারখানায় টাক মাথার জন্য ব্যবহার করা এসব পরচুল ক্যাপ তৈরি করে এসব গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক হতদরিদ্র নারী ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছেন। বেকার ও শিতি নারীরা খুঁজে পেয়েছে বাড়তি আয়সহ নতুন কর্মসংস্থানের। আর তাদের তৈরি করা হেয়ার ক্যাপ যাচ্ছে চীনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।

খামার বোয়ালী গ্রামের কিশোরী মোছা: মুন্নি আক্তার জানান, এখানে কাজ করে সংসারে অনেকটাই স্বচ্ছলতা এসেছে। কারণ প্রতিমাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করছি। আগেতো বাড়িতে বসে থাকতে হয়েছে। এ কারখানা হওয়াতে বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এ আয়ের কারণে স্বামীকেও সাপোর্ট দিতে পাচ্ছি। পাশাপাশি আমার বাচ্চাদের পড়াশুনার খরচ চলছে। 

পরচুলা তৈরির কাজে নিয়োজিত শিক্ষার্থী মিষ্টি বেগম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়াশুনার পাশাপশি এ কারখানায় কাজ করে বাড়তি উপার্জন করছি। এতে আমার পড়াশুনার খরচ চলছে পাশাপাশি সংসারেও সহযোগিতা করতে পারচ্ছি। আমি বলবো বাড়িতে বসে না থেকে বেকার নারীরা এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করলে নিজেই স্বাবলম্বী হবে। 

এমএস মমতা হেয়ার প্রোসেসিং গাইবান্ধা জেলা ম্যানেজার ফিরোজ কবীর জানান, দিনাজপুরে আমাদের মূল কারখানা তারিই শাখা হিসেবে গাইবান্ধায় গত ৩ মাস ধরে এ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সদর উপজেলার খামার বোয়ালী, বাদিয়াখালী ও তিনমাইল নামক এলাকার বেকার নারীরা এখানে কাজ করে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা উপার্জন করছে।

গাইবান্ধা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রবীন চন্দ্র রায় বলেন, গাইবান্ধা জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে পরচুলা তৈরির কারখানা গড়ে উঠায় এলাকার বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। 

এটি একটি ভালো উদ্যোগ। চায়না থেকে কাচামাল আমদানি করে, বাংলাদেশের নারীদের দিয়ে তৈরি করে এই হেয়ার ক্যাপ আবার চায়নাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। উদ্যোক্তা রাজু আহম্মেদ যদি আমাদের কাছে কোন সহায়তা কামনা করেন বিসিক এ ধরণের উদ্যোক্তাদের পাশে সব সময় আছে।

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×