ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শরীয়তপুরে প্রেমিক যুগলকে জুতা দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন

প্রকাশিত: ২২:১৫, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শরীয়তপুরে প্রেমিক যুগলকে জুতা দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর ॥ শরীয়তপুরের জাজিরার চরাঞ্চলে কথিত প্রেমে আবদ্ধ হওয়ার অপরাধে কিশোর-কিশোরীকে রশি দিয়ে বেঁধে গলায় জুতার মালা পরিয়ে জুতা ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। গোপনে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ রবিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সোমবার জাজিরা থানা পুলিশ এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে এলাকার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এলাকাবাসী জানান, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের আব্দুল মান্নান মল্লিক কান্দি গ্রামের সোনামিয়া ছৈয়ালের কন্যা ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী আইরিন আক্তার ও একই গ্রামের আসমত খানের ছেলে স্বপন মিয়া প্রেমে আবদ্ধ হয়। এরকম অজুহাতে স্থানীয় কুন্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কামাল হোসেন তার সহযোগীদের নিয়ে কথিত প্রেমিক যুগলকে আব্দুল মান্নান মল্লিককান্দি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শত শত শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে রশি দিয়ে বেঁধে জুতার মালা গলায় পরিয়ে তাদের জুতা ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় মেম্বার কামাল হোসেনের ভয়ে কেউ তাদের কাছে যেতে সাহস পায়নি। এর আগে ঔ প্রেমিক যুগলকে আটক করে মেম্বার কামাল হোসেন তার নিজ বাড়িতে রাতভর আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায় বলেও অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত হলে তাদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনাটি ফেসবুকের মাধ্যমে এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর থেকেই মেম্বার কামাল হোসেন ও তার সহযোগীরা এলাকায় গাঢাকা দিয়েছেন বিধায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কুন্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন বেপারী বলেন, এভাবে কিশোর-কিশোরীকে জুতার মালা পরিয়ে প্রকাশ্যে জুতা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা খুবই অমানবিক। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানান। আব্দুল মান্নান মল্লিককান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাসেম বলেন, স্কুল ছুটির পরে আমার বিদ্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে। আমার এ বিষয়ে কিছু করার ও বলার নেই। তবে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেছেন, প্রধান শিক্ষক আবুল হাসেমের ইন্দনেই দুবৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। জাজিরা থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এরকম একটি ঘটনার খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। নির্যাতিতদের থানায় নিয়ে আসতে বলেছি তাদের কাছ থেকে সঠিক ঘটনা জানার জন্য। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×