মেয়েদের পোল ভল্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার নিনা কেনেডির উচ্ছ্বাস
গত বছর আগস্টে রৌদ্রোজ্জ্বল বুদাপোস্টে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তিন ঘণ্টার ম্যারাথন এক দ্বৈরথের সমাপ্তি ঘটেছিল অমীমাংসিতভাবে। সেদিন ঘেমে নেয়ে একাকার, ক্লান্ত-শ্রান্ত অস্ট্রেলিয়ার নিনা কেনেডি এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেটি মুন এবং নিনা কেনেডি কেউ হারেননি। স্বর্ণপদক ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন সময়ের সেরা দুই পোল ভল্টার।
প্যারিসে আরেকটি মহাকাব্যিক শো-ডাউনে একাই জিতলেন কেনেডি। ৪.৯০ মিটার টপকে স্বর্ণের আনন্দে চোখ ভিজেছে ২৭ বছর বয়সী সুন্দরীর। এটি যে অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক ইতিহাসে মেয়েদের পোল ভল্টে প্রথম স্বর্ণ। ৪.৮৫ মিটার উচ্চতা টপকে রৌপ্য জিতেছেন মুন। ব্রোঞ্জ কানাডার আলিশা নিউম্যানের। কেনেডির এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়াও গড়েছে নতুন ইতিহাস। প্যারিস অলিম্পিকে দেশটির মোট স্বর্ণ পদক এখন ১৮টি। ২০০৪ এথেন্স এবং ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে সর্বোচ্চ ১৭টি করে স্বর্ণ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
‘এটা সত্যি অসাধারণ। প্রথম নারী পোল ভল্টার হিসেবে দেশকে অলিম্পিকের স্বর্ণপদক উপহার দিতে পেরেছি। বুদাপোস্টে সেই চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইানলের পর আমাদের এই লড়াই ঘিরে অবশ্য বাড়তি চাপ ছিল। কিন্তু এটা অলিম্পিকের মঞ্চ, আমি মাথা ঠান্ডা রেখে সেরাটা দিতে চেয়েছি।’ বলছিলেন কেনেডি। স্বর্ণজয়ীকে অভিনন্দন জানিয়ে রৌপ্য জয়ী কেটি মুনও ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের সেই অমীমাংসিত ম্যাচের প্রসঙ্গ টেনেছেন, ‘প্রথমেই আমি কেনেডিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
সে শুধু আমার প্রতিপক্ষ নয়, ভালো বন্ধুও। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তাই আমরা একটা সময়ে থামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কারণ খেলাটির সঙ্গে শারীরিক এবং মানসিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িয়ে থাকে। আর বন্ধুর সঙ্গে ফাইনাল ভাগ করা তো জয়ের মতোই আনন্দের!’ প্রায় এক বছর পর কেনেডি এবং মুন জে-ইন অলিম্পিক মহিলাদের পোল ভল্ট ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিরে আসেন।
উপযুক্তভাবে, তারা প্যারিসেও ছিলেন হট-ফেভারিট, ২৭-বছর-বয়সী কেনেডি এই বছর একটি পোল ভল্টারের সর্বোচ্চ রেকর্ড ভেঙেছেন এবং মুন প্রথম মৌসুমের ইনজুরির পরে ফর্মে ফিরেছেন।
স্বর্ণের লড়াইয়ে এদিন এক স্কোরে পিছিয়ে ‘হেড টু হেড যুদ্ধে’ অবতীর্ণ হন। পুরুষদের ৪০০-মিটার দৌড় শেষ হওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার পর, মুন তার প্রথম চেষ্টায় ৪.৯০ সময় নিয়ে সফলভাবে বারটি অতিক্রম করেন, তার দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করেন এবং তার তৃতীয় প্রচেষ্টায় বারটি অতিক্রম করেন।
ফাইনালে মুনের সমান ৪.৮৫ মিটার স্কোর গড়েও ‘হেড টু হেডে’ পিছিয়ে থেকে ব্রোঞ্জ জিতে কানাডাকে পদক এনে দেওয়া নিউম্যান বলেন, ‘আমি টোকিওতে মিস করেছি (পদক), রিওতে মিস করেছি। এই বছর ভালো অবস্থায় ছিলাম। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। শেষ পর্যন্ত দেশকে পদক উপহার দিতে পেরেছি।’ ১৯১২ স্টকহোম গেমসে উইলিয়াম হালপেনি পুরুষদের প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ জেতার পর নিউম্যান হলেন প্রথম কানাডিয়ান পোল ভল্টার যিনি অলিম্পিকে পদকের স্বাদ পেলেন।