যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বোনাসের ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে
দীর্ঘ ৫ বছর পর ভারত সফরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ দুপুরে বাংলাদেশের টেস্ট দল ভারতগামী বিমানে উঠবেন। এই সফরে আইসিসি বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে দুই ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান সফরে ২-০ ব্যবধানে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ শেষ করে ফেরার পর অবশ্য খুব বেশি অনুশীলনের সুযোগ পাননি ক্রিকেটাররা।
তবে ক্রিকেটের মধ্যেই থাকার কারণে ভারতের বিপক্ষেও দুর্দান্ত কিছু করার প্রত্যয় জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান থেকে দলের সঙ্গে ফেরার পরই প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে পরদিন ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যান। তিনি শনিবার রাতে দেশে ফিরেছেন এবং দলের সঙ্গেই আজ ভারতগামী বিমানে উঠবেন। ১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট দিয়ে সফর শুরু হবে টাইগারদের। তাই সরাসরি চেন্নাইয়ে যাবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।
দুই টেস্টের সিরিজ শেষে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজও খেলবে বাংলাদেশ দল। টেস্ট দলের বেশ কয়েকজন সদস্য টি২০ সিরিজও খেলবেন। টি২০ দলের বাকি ৯/১০ জন ক্রিকেটার আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতে।
২০১৯ সালে সর্বশেষবার ভারত সফরে গিয়ে ২ টেস্ট ও ৩ টি২০ ম্যাচের সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। সেবার কলকাতায় দিবারাত্রির টেস্ট খেলে প্রথমবারের মতো দুই দল। ইন্দোরে খেলে দ্বিতীয় টেস্ট। এরপর ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ^কাপ খেলতে ভারতে গেছে বাংলাদেশ দল। চেন্নাইয়ে দুটি ম্যাচও খেলেছে। তবে এবারই প্রথম টেস্ট খেলবে এই ভেন্যুতে।
সাধারণত চেন্নাইয়ে থাকে স্পিন সহায়ক উইকেট। কিন্তু এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ভিন্ন রকম উইকেট তৈরি করা হচ্ছে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে। এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে অপেক্ষা করছে লাল মাটির উইকেট এবং সেখানে ঘাসের উপস্থিতিও দেখা যাচ্ছে। তার মানে পেসারদের জন্য সুবিধা থাকবে এমন উইকেট প্রস্তুত করা হচ্ছে। পিচ লাল মাটির হওয়াতে একইসঙ্গে স্পিনাররাও বাড়তি বাউন্সের জন্য সুবিধা আদায় করে নিতে সক্ষম।
তাই ব্যাটারদের জন্যই মূলত এখানে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তবে শেষ পর্যন্ত কেমন উইকেট থাকবে সেটি ম্যাচের দিনই বোঝা যাবে। এখানেই বাংলাদেশ দল আগামী কয়েকদিন অনুশীলনের সুযোগ পাবে। প্রথম টেস্ট মাঠে গড়াবে ১৯ সেপ্টেম্বর। আজ সেখানে পৌঁছে সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার অনুশীলন করতে পারবেন শান্তরা। ভারতের বিপক্ষে ২০১৯ সালের সর্বশেষ সফরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই ম্যাচেই ভারতের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
ভারতীয় পেসারদের সামনে নাজেহাল হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতীয় পেসাররা দুই টেস্টে বাংলাদেশের ৪০টি উইকেটের ৩৫টাই শিকার করেছিলেন। এবারও জাসপ্রিত বুমরাহ আর মোহাম্মদ সিরাজের মতো বিশে^র অন্যতম সেরা দুই পেসার থাকছেন ভারতের বোলিং আক্রমণে।
ভারত সফরে অবশ্য এবার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে টেস্টে ভালো করার আত্মবিশ^াস পেয়েছেন শান্তরা। কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে মাত্র দুই সপ্তাহ আগে টেস্ট সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছেন তারা। বাংলাদেশের পেসাররা যেমন দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন, তেমনি স্পিনাররাও ভালো করেছেন। আর ব্যাটাররাও রান পেয়েছেন।
সর্বোপরি এবার বাংলাদেশ দল বেশ অনুপ্রাণিত। এর আগে ভারতের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলে ১১টিতেই বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ এবং দুটি মাত্র ম্যাচ ড্র করতে পেরেছে। শান্তরা দেশে ফিরে মাত্র কয়েকদিন অনুশীলন করেছেন কোচ হাতুরুর পরিকল্পনা অনুসারেই। অন্য কোচিং স্টাফরা দু’দিন আগেই বাংলাদেশে এসে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এবং স্থানীয় কোচ সোহেল ইসলাম ছিলেন অনুশীলনে।
শনিবার রাতে হাতুরুও ফিরেছেন এবং সব জল্পনা-কল্পনা পেছনে ফেলে ভারত সফরেও প্রধান কোচের ভূমিকায় থাকছেন তিনি। আজ দলের সঙ্গে তিনি ছাড়াও লজিস্টিক ম্যানেজার নাফিস ইকবালও যাবেন। টেস্ট সিরিজ শুরুর পর বিসিবির দুয়েকজন কর্মকর্তা যেতে পারেন ভারতে।
কানপুরে ২৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট। সেখানে হামলার হুমকি দিয়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। সে কারণে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ইতোমধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব জয় শাহর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জয় শাহ পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর বিসিবিও নিরাপত্তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবছে না। তাই ক্রিকেটাররা চাপমুক্ত হয়েই মাঠের ক্রিকেটে মনোনিবেশ করতে পারবেন।