ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস গড়ে সিংহাসন পুনরুদ্ধার জোকোভিচের

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে দুইয়ে সাবালেঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:২০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে দুইয়ে সাবালেঙ্কা

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ক্যারিয়ারের সেরা চমক উপহার দেয়া বেলারুশের এরিনা সাবালেঙ্কা

রাফায়েল নাদালের সঙ্গে ফরাসি ওপেনের যেমন সম্পর্ক, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নোভাক জোকোভিচের সম্পর্ক ঠিক তেমন। অতি প্রিয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ২২তম গ্র্যান্ডস্ল্যামে সেই নাদালকে ছোঁয়ার পাশাপাশি স্থানচ্যুত করলেন ‘ভবিষ্যতের নাদাল’ কার্লোস আলকারাজকে। ডব্লিউটিএ র‌্যাঙ্কিংয়ে সিংহাসন পুনরুদ্ধার করলেন সার্বিয়ান তারকা। পাঁচে থেকে শুরু করা দ্য জোকার গত জুনের পর ফের শীর্ষস্থান ফিরে পেলেন।

দুটি মেজর টুর্নামেন্টের মাঝে এত বড় লাফের ঘটনা অতীতে আর কখনোই ঘটেনি। আর ফাইনালে জোকোর কাছে হেরে যাওয়া স্টেফানোস সিৎসিপাস এক ধাপ এগিয়ে তিনে উঠেছেন। ওদিকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মেয়েদের এককে প্রথমবারের মতো কোনো গ্র্যান্ডস্ল্যামের ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করা এরিনা সাবালেঙ্কা দুই ধাপ এগিয়ে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। যদিও শীর্ষে থাকা ইগা সুইয়াটেকের সঙ্গে তার পয়েন্টের ব্যবধান আনেক। 
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর সময় জোকোভিচ র‌্যাঙ্কিংয়ের পাঁচ নম্বরে ছিলেন, শীর্ষে ছিলেন স্পেনের কার্লোস আলকারাজ। একদিকে জোকোর গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয় অন্যদিকে আলকারাজ চোটের কারণে আসর মিস করায় র‌্যাঙ্কিংয়ের এই পরিবর্তন। সেই ১৯৭৩ সালের পর থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই টুর্নামেন্টের মাঝে জোকোভিচের মতো এত বড় লাফ আর কেউ দিতে পারেননি। গোটা ক্যারিয়ারে এর আগে তিনি মোট ৩৭৩ সাপ্তাহ শীর্ষে ছিলেন, এবার শুরু হলো ৩৭৪তম সপ্তাহ।

স্বভাবতই দুইয়ে নেমে গেছেন আলকারাজ। আর ফাইনালে জোকোর কাছে হারলেও টুর্নামেন্টে ভালো খেলায় এক ধাপ এগিয়ে তিনে উঠেছেন সিৎসিপাস। চ্যাম্পিয়ন হলে তার সামনেও সুযোগ ছিল শীর্ষে ওঠার। গতবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন নাদাল এবার শেষ চারেও উঠতে পারেননি। স্প্যানিয়ার্ড কিংবদন্তি তাই দ্বিতীয় স্থানে থেকে চার ধাপ পিছিয়ে এক ধাক্কায় ছয় নম্বরে নেমে গেছেন। অন্যদিকে রাশিয়ান তারকা আন্দ্রে রুবলেভ তার ক্যারিয়ারসেরা পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছেন। ফাইনালে ৫-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৬ (৭-৫) গেমে সিৎসিপাসকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দশম এবং ক্যারিয়ারের ২২তম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয় করেন ৩৫ বছর বয়সী জোকোভিচ।
জোকোভিচের জীবনে গত একটা বছর ছিল বেশ টালমাটাল। শুরুটা হয়েছিল ২০২২-এর জানুয়ারিতে। দুবাই থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে জানতে পারেন, করোনার টিকা না নেয়ায় তাঁকে খেলতে দেওয়া হবে না। পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ডিটেনশন কেন্দ্রে। যে জীবনযাপনে তিনি অভ্যস্ত, সেখান থেকে সার্বিয়ান তারকাকে কঠিন পরিস্থিতিতেই পড়তে হয়েছিল। আইনি লড়াইয়েও সাফল্য মেলেনি। তবে জোকো ভেঙে পড়েননি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করা তার ছোটবেলার অভ্যাস।

চোখের সামনে গৃহযুদ্ধ, নৃশংসতা, হত্যযজ্ঞ দেখেছেন। লড়াইয়ের বীজ বপন হয়েছিল সেখান থেকেই। রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদালের যুগেও তাই জোকোভিচ বিরাজমান। শুধু তাই নয়, ওই দুই মহাতারকার অনেক পড়ে তার উত্থান। কিন্তু ২০২২-এ এসে তার নামের পাশে ২২টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম। শুধু তাই নয়, বাকি দুজনের বিরুদ্ধে মুখোমুখি সাক্ষাতেও তার পরিসংখ্যান বেশ ভালো। ফেদেরার একটু বেশি।

তবে সব ঠিকঠাক থাকলে গত বছরই হয়তো তার নামের পাশে ২২টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম লেখা হয়ে যেত। এবার হয়তো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সর্বোচ্চ শিরোপার রেকর্ডটাও গড়ে ফেলতেন। ভাগ্যের ফেরে শিরোপার জন্য অপেক্ষা করতে হলো ২০২৩ পর্যন্ত। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন পাননি। ফরাসি ওপেন যায় নাদালের ক্যাবিনেটে। উইম্বলডন জিতলেও তাই লাভ হয়নি জোকোভিচের। এফটিপির তরফ থেকে মেলেনে কোনো র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট। সেই সুযোগ শীর্ষে ওঠেন আলকারাজ।

×