চন্দ্রিকা হাতুরুসিংহের
সিলেটে কার্যত ইতিহাস গড়েছে টাইগাররা। আভিজাত্যের সাদা পোশাকে ঘরের মাটিতে প্রথমবারের মতো হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। তাও আবার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল, লিটন দাসসহ চার-পাঁচজন নিয়মিত ক্রিকেটারকে ছাড়া। টেস্টে নেতৃত্বের অভিষেকেই অবিস্মরণীয় এক সাফল্য উপহার দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবার সুযোগ ইতিহাসটাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার। মিরপুর টেস্ট জিতে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের হাতছানি টাইগারদের সামনে। এমনকি এই ম্যাচ ড্র করলেও ট্রফি উঠবে শান্তর হাতে।
কোচ চন্দ্রিকা হাতুরুসিংহের বিশ্বাস সিলেটের মতো মিরপুরেও জ্বলে উঠবে ক্রিকেটাররা। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে টাইগার কোচ কথা বলেছেন শেরেবাংলার উইকেট, একাদশের কম্বিনেশন, নতুন অধিনায়ক, তারুণ্যের ভবিষ্যৎ, তাইজুলের অবদানসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে। ‘বেশি তথ্য দিতে চাই না। কারণ নিউজিল্যান্ড দল হয়তো শুনবে বা পড়বে! আমাদের সমন্বয় (একাদশ) কেমন হবে, তা উইকেটের ওপর নির্ভর করবে এবং অবশ্যই আমাদের শক্তিমত্তার ওপর, ওদের (প্রতিপক্ষ) সীমাবদ্ধতার ওপর। সিলেটে আমরা পুরো পাঁচদিনই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমরা সেখানে যে সমন্বয় সাজিয়েছিলাম, তা ছিল সেখানকার কন্ডিশন অনুযায়ী।
মিরপুরের উইকেট কেমন হবে, তা আপনি দুই সেশন না খেলা পর্যন্ত বুঝতে পারবেন না। এখানে অনেক খেলা হয়, বিশ্বের কোথাও এক ভেন্যুতে এত খেলা হয় না। অনুমান কঠিন হবে। আমরা খুব বেশি পরিবর্তন করতে চাইব না।’ হাতুরুর কথায় পরিষ্কার ইঙ্গিত সিলেটের মতো ঢাকাতেও স্পিন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ছক কষছেন। সিলেটে নেতৃত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আলোচনায় শান্ত (১০৫)। ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। মুমিনুল হক, মাহমুদুল হাসান জয়, নাঈম হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ সবাই সর্বোচ্চটা উজার করে দিয়েছেন।
মিরপুর টেস্টের আগে হাতুরুর বলেন, ‘বার্তাটা একই। আমাদের যা আছে তা নিয়ে খেলা, নিজেদের সামর্থ্যটা বোঝা। প্রতিটি সেশনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। এই দল অভিজ্ঞতার দিক থেকে তরুণ কিন্তু দক্ষতায় ওরা খুবই ভালো। এটা আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের কৃতিত্ব, এই দলের সাতজন এনসিএলে খেলেছে। তরুণ দল সিলেটে সর্বোচ্চটা দিয়েছে। বার্তা হচ্ছে সেটাই, একই জিনিস আবার করো।’ অধিনায়ক শান্তর মাঝেও ভবিষ্যৎ দেখছেন হাতুরু, তবে সিদ্ধান্তটা বোর্ডের (বিসিবি) বলেও জানিয়েছেন তিনি, ‘তার নেতৃত্বও ছিল দুর্দান্ত। পারফর্ম্যান্স দিয়ে সে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। শ্রদ্ধা আদায় করে নিতে পেরেছে এবং সেই মানও দাবি করতে পেরেছে। আমার মনে হয়, তার অপেক্ষায় লম্বা ভবিষ্যৎ।
সিদ্ধান্তটা বোর্ডের ওপরই থাকছে।’ আলাদা করে তাইজুলের প্রশংসা করেছেন হাতুরু, ‘তার ওপর সাধারণত সেভাবে আলো পড়ে না, কারণ আমাদের আরেকজন বিশ্ব মানের ক্রিকেটার আছে, সাকিব (আল হাসান)। বেশিরভাগ ম্যাচে তাকে (তাইজুল) পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে খেলতে হয়েছে। তবে তার রেকর্ড অসাধারণ। প্রায় দুইশ উইকেট তার।’ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর সবে শুরু, সামনে অনেক ম্যাচ। হাতুরুর বিশ্বাস এই দলটা বিদেশের মাটিতেও ভালো করবে।