
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাপিয়ে নিজেদের তৈরি নতুন ড্রোন ক্যামেরা সিস্টেম ‘আসেলফ্লির-৬০০’ (Aselflir-600) উন্মোচন করেছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আসেলসান (Aselsan)। ইলেক্ট্রো-অপটিক নজরদারি ও লক্ষ্য নির্ধারণে সক্ষম এই ক্যামেরা ব্যবস্থাটি এর আগের সংস্করণ এবং আন্তর্জাতিক মানের পণ্যগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তুরস্কের বিখ্যাত ড্রোন নির্মাতা বাইকরের (Baykar) সঙ্গে যৌথভাবে এই ক্যামেরা তৈরি করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যেই আকিন্সি (Akinci) নামের ভারী ড্রোনে সফলভাবে পরীক্ষিত হয়েছে। খুব শিগগিরই এর সিরিজ উৎপাদন শুরু হবে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও ক্যামেরা প্রযুক্তিতে আরোপিত অবরোধের পরিপ্রেক্ষিতেই তুরস্ক নিজস্ব প্রযুক্তি উন্নয়নে ঝুঁকে পড়ে। আসেলসানের আগের ক্যামেরা লাইনআপের মধ্যে রয়েছে আসেলফ্লির-৪০০, ৫০০ এবং CATS, যেগুলোর উন্নত সংস্করণ হিসেবে এসেছে আসেলফ্লির-৬০০।
আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা (IDEF) ২০২৫-এ ইস্তাম্বুলে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যামেরাটি উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প অধিদপ্তরের প্রধান হালুক গোরগুন বলেন, ‘আমাদের ইলেক্ট্রো-অপটিক্স বিভাগ মনে করেছিল, আমরা আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারি। অবরোধের পর সেই সুযোগ কাজে লাগানো হয়েছে।’
আসেলসান-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেত আকিওল বলেন, ‘এই প্রযুক্তি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যাকে আকাশে উড়ন্ত একটি টেলিস্কোপ বললেও ভুল হবে না। বিদ্যমান ড্রোন ক্যামেরাগুলোর তুলনায় এর দেখার পরিসর ও লেজার রেঞ্জ ৩০ শতাংশ বেশি।’
আসেলফ্লির-৬০০ ক্যামেরাটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্য শনাক্ত ও শ্রেণিবিন্যাস করতে পারে। এটি শত্রু অবস্থান তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত করে রিয়েল-টাইমে তথ্য পাঠাতে সক্ষম।
বাইকরের চেয়ারম্যান সেলচুক বাইরাকতার বলেন, ‘আমরা আকিন্সিতে এই ক্যামেরা পরীক্ষা করেছি এবং দেখতে পেয়েছি এটি বিদেশি প্রতিযোগীদের তুলনায় দ্বিগুণ কার্যকর।’
আন্তর্জাতিক আগ্রহ ও রপ্তানি সম্ভাবনা
হালুক গোরগুন জানান, ইতোমধ্যে দুটি দেশ আসেলসানের সঙ্গে যৌথভাবে উন্নয়ন ও প্রযুক্তি স্থানান্তর নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘এটি এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি এবং প্রযুক্তি শেয়ার করা সম্ভব।’
কৌশলগত যোগাযোগেও নতুন উদ্ভাবন
আসেলসান এই মেলায় আরও একটি নিজস্ব উদ্ভাবন ‘ট্যাকটিকাল ডেটা লিংক (T-Link)’ প্রদর্শন করেছে। এটি যুদ্ধক্ষেত্রে সেনা সরঞ্জামগুলোর মধ্যে দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য তথ্য আদান-প্রদান নিশ্চিত করে। আহমেত আকিওল বলেন, ‘আমরা এখন শুধু কণ্ঠস্বর নয়, তাৎক্ষণিকভাবে ডেটা স্থানান্তরের সক্ষমতা অর্জন করেছি। এর ফলে, একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে চালিত ক্ষেপণাস্ত্র অন্য প্ল্যাটফর্মের রাডার ব্যবহার করে ছোঁড়া সম্ভব।’
গোরগুন জানান, আসেলসান ভবিষ্যতেও আরও উন্নত ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল সিস্টেম তৈরি করবে, যা বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক হবে। ইতোমধ্যে তুরস্কের বিমানবাহিনীর জন্য সিরিজ উৎপাদনের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
সূত্র: https://www.dailysabah.com/business/defense/turkiye-debuts-new-drone-camera-said-to-way-outperform-global-rivals
রাকিব