ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

মধু চিনার সঠিক উপায় ও ভুল পরীক্ষার ভ্রান্তি

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৮ জুলাই ২০২৫

মধু চিনার সঠিক উপায় ও ভুল পরীক্ষার ভ্রান্তি

ছবি: সংগৃহীত

 বাংলাদেশে মধু কেনাবেচায় ভেজাল একটি বড় সমস্যা। সাধারণ মানুষের মধ্যে মধু পরীক্ষা করার প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা এবং পদ্ধতি এখনো বিস্তৃতভাবে প্রচলিত থাকায় তারা অনেক সময় ভেজাল মধু গ্রহণ করে থাকেন।

মধু পরীক্ষায় পানি দিয়ে পরীক্ষা করা, আগুন দিয়ে দেখানো, পিপড়া খাওয়ানো কিংবা নোকে রেখে দেখা—এসব পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভুল এবং অবৈজ্ঞানিক। মধুর ঘনত্ব পানির চাইতে বেশি হওয়ায় পানি দিয়ে পরীক্ষা করলে মধু পানির নিচে চলে যাবে, যা ভুল ধারণার সৃষ্টি করে। মধুর মধ্যে থাকা গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ ও অন্যান্য হাইড্রোকার্বনের কারণে আগুনে সহজে জ্বলে, তাই আগুন দিয়ে পরীক্ষা করাও সঠিক নয়।

পিপড়া মধুর প্রতি আকৃষ্ট হয় কারণ এতে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, কিন্তু পিপড়া আসা বা না আসা মধুর খাটালতার নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা নয়। এ ছাড়া মধুর মধ্যে ২২ থেকে ২৬ শতাংশ ময়েশ্চার থাকে, যা আগুনে গলে যাওয়া বা শুকিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধু চিনার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হলো মধুর প্রকৃত বৈশিষ্ট্যগুলো যেমন রঙ, ঘ্রাণ, স্বাদ এবং ভৌত বৈশিষ্ট্য জানা। উদাহরণস্বরূপ, সরিষার মধু শীতকালে জমে যায়, কালোজিরার মধু কালচে ও গুড়ের ঘ্রাণযুক্ত হয়, আর সুন্দরবনের মধু তুলনামূলক পাতলা ও ময়েশ্চার বেশি থাকে।

বাংলাদেশের মধু বিক্রেতাদের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মধু পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে মাইক্রোস্কোপ, পিএইচ মিটার, রিফ্রেক্টোমিটার ইত্যাদি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে মধুর মান নির্ধারণ করা হবে এবং ভেজাল চিহ্নিত করা সহজ হবে। মধুর পোলেন বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোন মধু কোন ফুল থেকে এসেছে সেটিও নির্ণয় করা সম্ভব হবে।

সাধারণ মানুষ যদি মধুর প্রকৃত বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে সচেতন হন, তবে তারা সহজেই খাটাদার ও ভেজাল মধু আলাদা করতে পারবেন এবং বাজারে প্রতারণা থেকে রক্ষা পাবেন।

 

শেখ ফরিদ 

×