ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাইবান্ধায় কলেজ ছাত্রের সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সাড়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ১৬ মে ২০২৫

গাইবান্ধায় কলেজ ছাত্রের সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সাড়া

ছবি: জনকণ্ঠ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো: সামিউল ইসলাম। কম খরচে বিভিন্ন অভিনব সব যন্ত্র আবিষ্কার করে জেলা জুড়ে আলোচনা উঠেছেন তিনি।

সামিউল ইসলাম মহদীপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোপালপুর গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি ২০১৯ সালে আমলাগাছী বিএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। বর্তমানে ঢাকার ইস্টার্ন ইউনিভারসিটিতে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ  বিএসসিতে পড়ালেখা করছেন।

প্রচলিত দামের চেয়ে কম খরচে ও তেল, বিদ্যুৎ ছাড়া সাশ্রয়ী মূল্য মানুষের প্রয়োজনীয় যন্ত্র বা ডিভাইস তৈরি করতে চেষ্টা করছেন সামিউল। এরই মধ্যে বেশ কিছু যন্ত্র তৈরি করে সফলতাও পেয়েছেন তিনি।

দেশের তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দিয়ে অল্প খরচে তৈরি করা যাবে ও দুই জন যাত্রী নিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার যাওয়া যাবে এমন একটি প্লেনের পরীক্ষামূলক ছোট আকারের ডামি বিমান তৈরি করেছেন তিনি। করেছেন সফল ভাবে উড্ডয়ন।

সামিউল অল্প খরচে দ্রুত প্রয়োজনীয় গন্তব্য যাওয়ার জন্য তৈরি করেছেন সৌর প্যানেল দিয়ে যান্ত্রিক সাইকেল। সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ বাঁচাতে তিনি এ সাইকেল তৈরি করেছেন। পাশাপাশি মাত্র ৫০০ টাকায় মাসে ৩২ টাকার বিদ্যুৎ খরচ দিয়ে তৈরি করেছেন ১০০টি ডিম ফুটোনোর আধুনিক ইনকিবিউটর।

সামিউল তৈরি করেছেন ছোট আকৃতির হাতে পরিবহনযোগ্য মাত্র ২০০ টাকা খরচ দিয়ে ১ হর্সের চার্জার সেচ পাম্প। যেখানে বিদ্যুৎ নেই এই চার্জার সেচ পাম্প দিয়ে চালানো যাবে প্রয়োজনীয় পানির কাজ। সামিউলের আরেকটি অন্যতম উদ্ভাবন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মাটি কাটার স্কেভেটার বা ভেকু মেশিন। অতিরিক্ত তেল দিয়ে এ মেশিন চললেও সামিউল তৈরি করেছেন তেল ছাড়া শুধু হাত ও পায়ের সাহায্যে বায়ু শক্তিকে কাজিয়ে লাগিয়ে স্বাভাবিক গতিতে চলবে এমন স্কেভেটার বা ভেকু মেশিন।

এছাড়াও  পরিবেশ রক্ষায় স্মার্ট ডাসবিন, মানুষ ছাড়া আগুন শনাক্ত ও নেভানোর কাজ করবে এমন রোবট, সাইকেলের চাকা দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি, বন্যাকবলিত এলাকায় কম খরচে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার স্পিড বোর্ডসহ তৈরি করেছেন কম খরচে প্রয়োজনীয় প্রায় ৩০টি মতো যন্ত্র।সামিউলের এমন অভিনব সব সাফল্যে গর্বিত তার পরিবার এবং স্থানীয়রা।

সামিউল ইসলামের বাবা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সামিউল ছোটবেলা থেকে উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে সারাদিন থাকতো। এলাকাবাসীর যান্ত্রিক কিছু নষ্ট হলে ঠিক করে দিতো। যে-সব যন্ত্র মেকাররা ঠিক করতে পারে না সামিউল অল্প সময়ে তা ঠিক করে দেয়।


চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও তা না হতে পেরে এখন চিকিৎসক রোবট বানানোর কাজ করছেন সামিউল। রোবটটির নাম দিয়েছেন ডা. নীলা। এই রোবট ডাক্তার মানুষের জ্বর, ডায়াবেটিস পরিমাপসহ সব ধরনের চিকিৎসা দিবে। ২০টির অধিক বিভিন্ন রোগের পরীক্ষাসহ রোগীকে দিবে চিকিৎসা সেবা। যেটি বানানোর প্রায় শেষ পর্যায়ে।

সামিউল ইসলাম জানান, বাজার দামের চেয়ে অধিক কম খরচে ও তেল, বিদ্যুৎ ছাড়া সৌর শক্তি এবং কায়িক শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের প্রয়োজনীয় যন্ত্র বা ডিভাইস তৈরি করতে চেষ্টা করছেন তিনি।
আরও বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় যন্ত্র তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে বলেও জানান তিনি।
 

সাব্বির

×