ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

গ্রহাণুর মুখোমুখি পৃথিবী, অল্পের জন্য বাঁচল ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১১ মে ২০২৫

গ্রহাণুর মুখোমুখি পৃথিবী, অল্পের জন্য বাঁচল ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে

ছবি:সংগৃহীত

গত বুধবার পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে দ্রুতগতির এক বিশাল গ্রহাণু অতিক্রম করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, অ্যাপোলো শ্রেণির এই গ্রহাণুটির ব্যাস ছিল প্রায় ১৪০ মিটার যা আকারে একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমানের সমান। গ্রহাণুটির গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৪৮ হাজার ৯০০ কিলোমিটার।

নাসার দেওয়া তথ্যমতে, গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৬৮ লাখ কিলোমিটার দূর দিয়ে পাশ কাটিয়ে যায়। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার পথে এটি পৃথিবীর কক্ষপথও অতিক্রম করেছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, যদি এই গ্রহাণুটি কোনোভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করত, তাহলে তা ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতো। তুলনা হিসেবে বলা যায়, ২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্ক শহরের আকাশে বিস্ফোরিত উল্কাপিণ্ডটির ব্যাস ছিল মাত্র ১৮ মিটার, এবং সেই ঘটনায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।

বিজ্ঞানীদের মতে, গ্রহাণুর আকার ও গতির ওপর নির্ভর করে তার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা। ছোট গ্রহাণু সাধারণত বায়ুমণ্ডলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং উল্কাপাতের সৃষ্টি করে। মাঝারি আকারের গ্রহাণু যাদের আকার কয়েক মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ভূপৃষ্ঠে আঘাত হানলে বিশাল গর্ত ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে। এতে ভূমিকম্প ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও দেখা দিতে পারে।

আর যদি গ্রহাণুর আকার কয়েক কিলোমিটারের বেশি হয়, সেটি সম্পূর্ণ একটি গ্রহস্তরের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বড় ধরনের সংঘর্ষে বিশ্বব্যাপী অগ্নিকাণ্ড, অ্যাসিডবৃষ্টি, দীর্ঘস্থায়ী ধোঁয়াশা ও জলবায়ু পরিবর্তন ঘটতে পারে। এমন একটি আঘাত অতীতে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছিল যার ফলে ডাইনোসররা বিলুপ্ত হয়ে যায়।

নাসা ও আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষকরা নিয়মিতভাবে পৃথিবীর কাছাকাছি আসা গ্রহাণুগুলোর গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন, যাতে এমন সম্ভাব্য বিপদের আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া সম্ভব হয়।

আলীম

×