ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

স্মার্টফোন ছাড়াই হবে সব কাজ: প্রযুক্তি জায়ান্টদের ভবিষ্যদ্বাণী

প্রকাশিত: ০৩:১৯, ১২ মে ২০২৫

স্মার্টফোন ছাড়াই হবে সব কাজ: প্রযুক্তি জায়ান্টদের ভবিষ্যদ্বাণী

ছবি: সংগৃহীত

দুই দশক ধরে বিশ্বজুড়ে আধিপত্য চালানো গুগল, ফেসবুক এবং আইফোন—এই তিন প্রযুক্তি দানবের ভবিষ্যৎ এখন আর আগের মতো উজ্জ্বল নয়। এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে মেটা ও গুগলের বিরুদ্ধে চলা দুটি পৃথক অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার শুনানিতে, যেখানে প্রযুক্তি জায়ান্টদের শীর্ষ নির্বাহীরা নিজেরাই স্বীকার করেছেন—তাদের জনপ্রিয় পণ্যগুলোর প্রভাব ক্রমেই কমছে।


মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ আদালতে বলেন, মানুষ এখন আর আগের মতো ফেসবুকে বন্ধু যোগ করছে না বা ব্যক্তিগত পোস্ট দিচ্ছে না। বরং সরাসরি মেসেজে যোগাযোগ বেড়েছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ সালে যেখানে ৭১% টিনএজার ফেসবুক ব্যবহার করত, সেখানে ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩২%-এ। এখনকার তরুণ প্রজন্ম টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের রিলসে বেশি আগ্রহী।


অ্যাপলের সার্ভিস বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এডি কিউ আদালতে জানান, গুগলে সার্চের হার আমাদের ডিভাইসগুলোতে প্রথমবারের মতো কমে গেছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ—ব্যবহারকারীরা এখন বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য চ্যাটবট ও এআই টুল ব্যবহার করছে।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার ২৫% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।


অ্যাপল নিজেই বলছে, ১০ বছর পর হয়তো আইফোনের আর দরকারই হবে না। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে কিউ বলেন, আপনারা ভাবতে পারেন এটি পাগলামি, কিন্তু ভবিষ্যতে স্মার্ট চশমা বা এআই-নির্ভর হ্যান্ডস-ফ্রি প্রযুক্তিই আধিপত্য বিস্তার করবে।


মেটার স্মার্ট চশমা ‘রেব্যান স্টোরিজ’, অ্যাপলের ৩,৫০০ ডলারের ‘ভিশন প্রো’, এবং গুগলের একাধিক গোপন প্রকল্প—সবই ইঙ্গিত দেয় প্রযুক্তির পরবর্তী ধাপ হতে যাচ্ছে ‘চোখের সামনে’ বাস্তবতাকে এআইয়ের মাধ্যমে রূপান্তর করার এক জগৎ।

জুকারবার্গ বলেন, আমরা এমন এক জগতে যাচ্ছি, যেখানে মোবাইল ফোন নয়, বরং স্মার্টগ্লাস ও হোলোগ্রাম দিয়েই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থাকব।


সামাজিক যোগাযোগ, সার্চ ইঞ্জিন এবং স্মার্টফোন—এই তিন ক্ষেত্রেই গুগল, মেটা ও অ্যাপলের আধিপত্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আর এটাই এখন তাদের সামনে বড় যুদ্ধ—প্রাসঙ্গিকতা টিকিয়ে রাখা।

বর্তমানে এই জায়ান্টরা নতুন প্রযুক্তির পেছনে বিপুল বিনিয়োগ করছে, যেন তারা আবার ‘পরবর্তী বড় আবিষ্কার’-এর মাধ্যমে বিশ্বকে চমকে দিতে পারে।

এসএফ 

×