ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

নতুন ল্যাপটপ? আগে জানুন এই সাতটি ‘না জানলেই বিপদ’ তথ্য!

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ১১ মে ২০২৫

নতুন ল্যাপটপ? আগে জানুন এই সাতটি ‘না জানলেই বিপদ’ তথ্য!

ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি নতুন ল্যাপটপ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত? বাজারে এত ধরনের ডিভাইস রয়েছে, আর প্রতিনিয়তই আসছে নতুন নতুন মডেল—এই পরিস্থিতিতে কী গুরুত্বপূর্ণ, আর কী শুধুই চটকদার গিমিক, তা বোঝা বেশ কঠিন।

এই লেখায় আমরা নতুন ল্যাপটপ কেনার সময় বিবেচনার জন্য সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

১. আকার
ল্যাপটপের অন্যতম বড় সুবিধা হলো এটি সহজেই ব্যাগে ঢুকিয়ে সঙ্গে করে যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। আপনি যদি পোর্টেবিলিটি বা বহনযোগ্যতা নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তবে ছোট স্ক্রিন এবং হালকা ওজনের ল্যাপটপের দিকে নজর দিন। এ ধরনের ল্যাপটপ সাধারণত ‘আল্ট্রাবুক’ নামে বাজারজাত করা হয়, এই শব্দটির দিকে খেয়াল রাখুন।

আরও নির্দিষ্টভাবে বললে, এমন একটি ডিভাইস বেছে নিন যার স্ক্রিন ১২ থেকে ১৩.৩ ইঞ্চির মধ্যে এবং ওজন ১.৫ কেজির কম।

২. র‍্যাম
র‍্যাম বা র‍্যান্ডম অ্যাকসেস মেমোরি ল্যাপটপের কর্মদক্ষতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে আপনি যদি একসঙ্গে একাধিক কাজ করেন—যেমন ছবি এডিট করা, ওয়ার্ড ডকুমেন্ট লেখা এবং একাধিক ব্রাউজার ট্যাব চালানো।

র‍্যাম যত বেশি হবে, আপনার ল্যাপটপ তত দ্রুত ডেটা অ্যাকসেস করতে পারবে এবং একাধিক অ্যাপ্লিকেশন একসঙ্গে নির্বিঘ্নে চালাতে পারবে। ন্যূনতম ৪ জিবি র‍্যাম থাকা উচিত। আপনি যদি ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তবে ৮ জিবি বা তার বেশি র‍্যাম খুঁজুন।

৩. স্ক্রিনের মান
বেশিরভাগ মানুষের মতো আপনিও হয়তো প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাপটপ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকবেন। তাই চোখের আরাম নিশ্চিত করার জন্য ভালো মানের স্ক্রিন বেছে নেওয়া জরুরি।

চকচকে স্ক্রিনে চারপাশের আলো প্রতিফলিত হয়, যা চোখে ঝলক সৃষ্টি করতে পারে। টাচস্ক্রিন ল্যাপটপে সাধারণত চকচকে স্ক্রিনই থাকে, তাই সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন।

এছাড়াও আপনি কীভাবে ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন, তার ওপর ভিত্তি করে স্ক্রিন রেজুলেশনও গুরুত্বপূর্ণ। ১৯২০×১০৮০ পিক্সেল রেজুলেশন সম্পন্ন স্ক্রিনকে ফুল এইচডি বলা হয়। এতে ছবি ভালো দেখাবে এবং একাধিক উইন্ডো সহজে দেখা যাবে।

সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি কাছের কম্পিউটার দোকানে গিয়ে স্ক্রিনগুলো নিজের চোখে দেখে আসেন। কারণ কেবল টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন দেখে স্ক্রিনের আসল মান বোঝা কঠিন।

৪. ব্যাটারির স্থায়িত্ব
আপনি যদি চলাফেরার মধ্যে ল্যাপটপ ব্যবহার করতে চান (হয়তো শুধু ডেস্ক থেকে বিছানায় নিয়ে যাওয়া), তাহলে ব্যাটারি লাইফ অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়ার মতো একটি দিক।

অনেক সময় কোম্পানির দেওয়া ব্যাটারি ব্যাকআপের তথ্য বাস্তবে মিলেই না। স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা, চালানো সফটওয়্যারের ধরন ইত্যাদি ব্যাটারির স্থায়িত্বে প্রভাব ফেলে।

ঘণ্টার হিসাবের চেয়ে ব্যাটারির রেটিং দেখুন। সংখ্যাটা যত বড় হবে, ব্যাটারিও তত বেশি সময় টিকবে।

৫. প্রসেসর
প্রসেসর হলো ল্যাপটপের মূল চালিকাশক্তি। প্রসেসরের ক্ষেত্রে ইন্টেলের কোর (Core) সিরিজকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ধরা হয়। নতুন ল্যাপটপে সাধারণত Core i3, i5 বা i7 প্রসেসর থাকে।

  • Core i3 সাধারণত এন্ট্রি লেভেলের ল্যাপটপে থাকে।

  • Core i5 বেশিরভাগ মাঝারি দামের ল্যাপটপে থাকে।

  • Core i7 উচ্চমানের পারফরমেন্স দেয়, তবে এটি থেকে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হতে পারে।

৬. স্টোরেজ
স্টোরেজের পরিমাণের পাশাপাশি তার ধরনও গুরুত্বপূর্ণ। আগে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD) জনপ্রিয় ছিল। এখন হালকা ও স্লিম ল্যাপটপের কারণে SSD বা সলিড স্টেট ড্রাইভ বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

SSD তুলনামূলকভাবে দ্রুত, শব্দহীন এবং নির্ভরযোগ্য, তবে দাম বেশি। আপনি যদি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, তাহলে আমাদের “হার্ড ডিস্ক বনাম সলিড স্টেট ড্রাইভ” সম্পর্কিত ব্লগপোস্টটি দেখতে পারেন।

৭. ইউএসবি ৩.০ পোর্ট
আপনি যদি এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ, মাউস, কীবোর্ড ইত্যাদি ব্যবহার করতে চান, তবে ইউএসবি ৩.০ পোর্ট থাকা আবশ্যক। অনেক নতুন ডিভাইসে, যেমন ম্যাকবুক প্রো-তে এটি থাকে না। কেনার আগে এটি ভালোভাবে যাচাই করে নিন।

এই সাতটি বিষয় মাথায় রেখে আপনি সহজেই নিজের জন্য উপযুক্ত একটি ল্যাপটপ বেছে নিতে পারবেন। প্রযুক্তির দুনিয়া যতই জটিল হোক, একটু সচেতন হলে আপনার পছন্দের ডিভাইস খুঁজে পাওয়া একেবারেই কঠিন নয়।

 

সূত্র: https://computercures.com.au/7-important-factors-consider-buying-new-laptop/

এএইচএ

×