
ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলের পৃষ্ঠে রোভারের ২৯ মিটার (প্রায় ৯৫ ফুট) দীর্ঘ উইকেন্ড ড্রাইভ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে নাসার পাথানো রোভার অবস্থান করছে এমন এক অঞ্চলে, যেখানে ভূগর্ভে প্রচুর পলিগন আকৃতির ফাটলযুক্ত শিলা বিদ্যমান।
এই ফাটলগুলো কিভাবে তৈরি হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এগুলো কি কয়েক বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল গ্রহ শুকাতে শুরু করলে তৈরি হয়েছিল? নাকি পরে যখন ভূগর্ভস্থ পানি এই শিলাগুলো ভেদ করে চলাচল করত, তখন তৈরি হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রোভারটি এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের শিলা ও ভূ-গঠনের নমুনা সংগ্রহ করছে। সাধারণ শিলা থেকে শুরু করে অস্বাভাবিক গঠনবিশিষ্ট অংশ—সবকিছুই গবেষণার আওতায় আনা হচ্ছে।
বর্তমানে “Touch and Go” মিশন পরিকল্পনা অনুসরণ করা হচ্ছে, যার মানে হলো, প্রতিটি অবস্থানে খুব স্বল্প সময়ের জন্য বিজ্ঞান গবেষণা চালানো হয়। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় রোভার সক্রিয় হয় এবং দুপুর ২টার মধ্যেই পরবর্তী গন্তব্যে যাত্রা শুরু করে। ফলে এক দিনে যতটা সম্ভব গবেষণা ডেটা সংগ্রহ করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
শুক্রবার আমরা পলিগন আকৃতির শিলার ওপর APXS (Alpha Particle X-ray Spectrometer) পরীক্ষা করেছি। তাই আজ আমরা তুলনামূলকভাবে সাধারণ শিলার ওপর পরীক্ষা চালাচ্ছি। “Encinitas” নামের একটি লক্ষ্যবস্তুতে APXS ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করা হবে এবং MAHLI ক্যামেরা দিয়ে চিত্র ধারণ করা হবে।
অন্যদিকে, ChemCam যন্ত্রটি “Jack Creek” নামের একটি লম্বাটে শিরা (vein) আকৃতির অংশে LIBS (Laser Induced Breakdown Spectroscopy) পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ চালাবে, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার। এই শিরাটি পলিগন বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। Mastcam এবং MAHLI ক্যামেরা দিয়ে এই শিরাটির ছবি তোলা হবে।
রোভারের কাছাকাছি এলাকায় Mastcam “Loma Verde” নামের একটি উল্টানো শিলার খণ্ড এবং “Temescal Canyon” নামের একটি বৃহৎ পলিগন কাঠামোর ছবি তুলবে। আরও দূরের একটি লক্ষ্যে, “Agua Tibia”-তে ChemCam দূরবর্তী চিত্র ধারণ করবে। এটি “Torote Bowl” নামের একটি বৃত্তাকার কাঠামোর কাছাকাছি, যেটিকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে (sol 4486 থেকে) পর্যবেক্ষণ করছি।
সকালের মধ্যে সব তথ্য সংগ্রহের পর, রোভার ২৬ মিটার (প্রায় ৮৫ ফুট) অগ্রসর হবে। আমরা এখন সেই বহুল প্রতীক্ষিত “boxwork structures”-এর আরও কাছাকাছি চলে এসেছি। অনেক দিন ধরেই আমরা বলছি—এই কাঠামোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, আর এখন অবশেষে, অদূর ভবিষ্যতেই আমাদের রোভার তার চাকায় প্রথমবারের মতো সেই অঞ্চল স্পর্শ করতে চলেছে।
সূত্র: নাসা
রবিউল