
স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহার
স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে বলে জানা গেছে এক গবেষণা থেকে। নিউইয়র্কের নিউ বার্গের ফ্রি অ্যাকাডেমি লাঞ্চের সময়সহ স্কুলের পুরো সময়টা সেল ফোন বন্ধ রাখার নিয়ম করেছে। এক গবেষণায় দেখে গেছে , এ নিয়মের কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে।
জার্নাল অফ দ্য অ্যামেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিইয়েশন পেডিয়াট্রিক্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অনুসারে স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে কোভিড লকডাউনের সময় থেকে তাদের ফোনের স্ক্রিন দেখার হার দ্বিগুণের বেশি ছিল। কিন্তু সেল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তাদের ক্রমাগত স্বস্তি দিচ্ছে।
নিউবার্গ ফ্রি অ্যাকাডেমির ছাত্র টাইসন হিল ফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা নিয়ে সিবিএসকে বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়গুলোর জন্য দায়ি আমার ফোন।’
একই স্কুলের ছাত্রী মোনিক মে জানিয়েছেন, কোভিডের সময় তার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ‘পুরোপুরি দায়ি’ ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার।
মে আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে নিজেকে তার বিচ্ছিন্ন ও বুলিংয়ের শিকার মনে হতো।
তিনি বলেন, ‘আমার মিডল স্কুলের পুরো সময় স্ন্যাপচ্যাট বা অন্য কোনো পোস্টে আমাকে ও আমার চেহারা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলত। এর ফলে আমি বিষণ্ণতায় ভোগা শুরু করি।’
সিবিএস নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউএস সেন্টারস ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) জরিপ অনুযায়ী ৫৭ শতাংশ হাই স্কুলের ছাত্রীরা মহামারির সময় নিজেদের অসহায় বা দুঃখী ভাবতেন।
অ্যামেরিকান সার্জন জেনারেল ভিভেক মূর্তি মে মাসে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর স্যোসাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে একটি নির্দেশনা দেন।
মূর্তি সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট একটি জনস্বাস্থ্যগত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন আমরা যদি এই সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান না করি তবে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ ও আত্মহত্যার কারণে আমরা একটি পুরো প্রজন্মের শিশুদের হারিয়ে ফেলব।’
মূর্তি স্কুলে ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘স্কুলগুলোতে ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। কারণ এসব ডিভাইস বিশেষ করে স্যোশাল মিডিয়া শিক্ষার্থীদের ফোনে আসক্ত করে তোলার মূল উপাদান।’
নিউ বার্গের ফ্রি অ্যাকাডেমি স্কুলের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিন্সিপাল ইবোনি ক্লার্ক বলেন, ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার কারণে অনলাইন বুলিংএর হার অনেক কমেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ডিভাইসগুলোকে দরজার বাইরে রেখে শিক্ষার্থীদের স্কুলের কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগ করে দিয়েছি’।
মনিক মে যোগ করেন, নিউবার্গ স্কুলের নিষেধাজ্ঞার ফলে তার মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নিজেকে নিয়ে আমি এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। এর মূল কারণ হচ্ছে অন্যরা আমাকে নিয়ে কী ভাবছে সেটা নিয়ে চিন্তা না করে। নিজের মতো থাকা।’
এবি