
ছবি: সংগৃহীত
মানবদেহের সুস্থতা ও শক্তির পুনর্গঠনের অন্যতম প্রধান উপায় হলো ঘুম। এটি শুধু শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করার মাধ্যম নয়, বরং ইসলামের দৃষ্টিতে এটি এক বিশেষ অনুগ্রহ—আল্লাহর দেওয়া এক অপূর্ব নিয়ামত।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, "আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী" (সূরা আন-নাবা: ৯)। অন্য একটি আয়াতে তিনি বলেন, "আর তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণস্বরূপ, বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছেন, আর ছড়িয়ে পড়ার জন্য দিনকে করেছেন।" (সূরা আল-ফুরকান: ৪৭)
ফজরের পর ঘুম নয়
ইসলামে রাতকে মূলত ঘুমের সময় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে হাদিসে দিনের বেলা স্বল্প সময় বিশ্রামের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছে, যাকে বলা হয় "কায়লুলাহ"। তবে রাসূল (সা.) কিছু বিশেষ সময়ে ঘুম থেকে নিরুৎসাহিত করেছেন, যেমন ফজরের নামাজের পর।
রাসূলুল্লাহ (সা.) দোয়া করেছেন: "হে আল্লাহ, আমার উম্মতের সকালবেলাকে বরকতময় করুন।" তাই ফজরের নামাজের পর ঘুমানোকে বরকত থেকে বঞ্চিত হওয়া হিসেবে দেখা হয়।
আসরের পর ঘুমে ক্ষতি
হাদিস অনুযায়ী, আসরের নামাজের পর ঘুমানো মাকরুহ। মুফাসসিরগণ বলেন, ওই সময় ঘুমালে মানুষের বুদ্ধি কমে যেতে পারে। তাই এই সময় ঘুম না দিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মাগরিব ও এশার মাঝখানে ঘুম অনুচিত
মাগরিব ও এশার মাঝখানে ঘুমালে অনেক সময় জামাতে এশার নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই হাদিসে এই সময়ে ঘুমানোকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূল (সা.) এশার নামাজের পূর্বে ঘুমানো এবং নামাজের পর অহেতুক গল্প-গুজবকে অপছন্দ করতেন।
ইসলাম ও ঘুম: সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামী জীবনব্যবস্থায় ঘুমকে শুধুমাত্র বিশ্রামের মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং সময়ের সদ্ব্যবহার, ইবাদত ও সুস্থতার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ইসলামী ঘুমের আদব ও নির্দিষ্ট সময় মেনে চললে শরীর ও মনের জন্য তা হতে পারে আশীর্বাদস্বরূপ।
শেখ ফরিদ