ছবি: সংগৃহীত
মৃত্যুর পর মানুষের পারলৌকিক জীবন শুরু হয়। এ সময় থেকেই তারা ভালো ও মন্দ কাজের ফল ভোগ করে। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন কারণে কবর জীবনে শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হলো-
শিরক করা: আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করা গুরুতর পাপ। এ কারণে কবরে শাস্তি হয়। আজ তোমাদের অবমাননাকর শাস্তি দেওয়া হবে। কারণ তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে অমূলক কথা বলতে এবং তাঁর নিদর্শনের ব্যাপারে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৯৩)
হাদিসে এসেছে, জায়েদ বিন সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বললেন, ‘এ উম্মত কবরে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তোমরা মৃত ব্যক্তিদের দাফন করা ছেড়ে না দিলে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম যেন তিনি তোমাদেরও কবরের আজাব শুনতে দেন যেভাবে আমি শুনতে পাই।’
মুনাফেকি স্বভাব : কপট স্বভাবের ব্যক্তিরা কবরে শাস্তি পাবে। ইরশাদ হয়েছে, মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশপাশে রয়েছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক এবং মদিনাবাসীর মধ্যেও কেউ কেউ, তারা কপটতায় খুবই পটু, আপনি তাদের চিনেন না, আমি তাদের চিনি, আমি তাদের দুবার শাস্তি দেব এবং পরে তাদের মহাশাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। (সুরা তাওবা, আয়াত : ১০১)
আল্লাহর বিধান পরিবর্তন : আল্লাহ কর্তৃক বৈধ কাজকে অবৈধ মনে করা এবং অবৈধ কাজকে বৈধ মনে করা কঠিন গুনাহের কাজ। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, আমি আমর ইবনে আমির খুজাইকে তার বেরিয়ে আসা নাড়িভুঁড়ি নিয়ে জাহান্নামের আগুনে চলতে দেখেছি। এই ব্যক্তি প্রথম মূর্তির নামে পশু উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলন করেছিল। (বুখারি, হাদিস : ৪৬২৩)
প্রস্রাবের পর পবিত্রতা অর্জনে অবহেলা: প্রস্রাব করার পর পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে অনেকে অবহেলা করে। অন্য হাদিসে এসেছে, ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, প্রস্রাবের কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কবরের আজাব হয়ে থাকে। অতএব তোমরা যথাযথভাবে পবিত্রতা অর্জন করো। (তাবরানি, হাদিস : ১১১০৪)
ঋণ পরিশোধ না করা: ঋণ পরিশোধ না করে মারা গেলে কবর থেকে শাস্তি শুরু হয়। সাআদ বিন আতওয়াল (রা.) বর্ণনা করেন, আমার ভাই তিন শ দিনার ও ছোট সন্তান রেখে মারা যায়। আমি সন্তানদের জন্য তা খরচ করার ইচ্ছা করি। তখন রাসুল (সা.) আমাকে বলেন, তোমার ভাই ঋণের কারণে আটকা পড়েছে। তার পক্ষ থেকে তুমি তা পরিশোধ করো।
প্রাণীদের বন্দি করে শাস্তি দেওয়া: রাসুল (সা.) বলেন, আমি জাহান্নামে ওই নারীকে দেখেছি যে বিড়াল বেঁধে রেখেছিল। সে বিড়ালকে খেতেও দিত না, আবার ছেড়েও দিত না, যেন সে কীটপতঙ্গ খেতে পারে। এভাবে ক্ষুধায় সে মারা যায়। (মুসলিম, হাদিস : ৯০৪)
পরনিন্দা করা: পরনিন্দার কারণে কবরে আজাবের কথা বর্ণিত হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, একদা রাসুল (সা.) দুটি কবর অতিক্রম করছিলেন। তখন তিনি বলেন, তাদের দুজনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের এ শাস্তি বড় কোনো কারণে নয়। একজন প্রস্রাব করার পর উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করত না। অন্যজন পরনিন্দা করত, অর্থাৎ একজনের কথা অন্যজনকে বলত। এরপর রাসুল (সা.) খেজুরের তাজা ডাল দুই ভাগ করে উভয়ে কবরে গেড়ে দেন।
সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি এমন করলেন কেন? রাসুল (সা.) বললেন, তা শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত হয়তো তাদের শাস্তি লাঘব হবে। (বুখারি, হাদিস : ২১৮)
এসআর
