
ছবি: সংগৃহীত
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সন্তান, ভগ্নি এবং তার সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও দু’একটি মামলা অনুসন্ধানে রয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের সময়ে সম্পদ বিবরণীসহ বিভিন্ন সময়ে সম্পদের পরিমাণ অনেকাংশে গোপন করা হয়েছে।
রোববার দুপুর আড়াইটায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় হবিগঞ্জের আয়োজনে এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান সকালে সূচনা বক্তব্যে বলেন, “দুর্নীতি বৈষম্যের সৃষ্টি করে। দুর্নীতি যতটা কমিয়ে আনা যাবে, বৈষম্য ততটাই কমবে।” তিনি আরও বলেন, “শুধু দুদক নয়, সরকারি অফিসের প্রধানরাও সপ্তাহে একদিন অফিস খোলা রেখে সেবা প্রত্যাশীদের কথা শোনেন।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেমন একটি বাহিনীর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার উদ্ভব হয়েছিল, তেমনি গত ৫ আগস্টের পর বেশ কিছু ব্যক্তি ভুয়া সমন্বয়ক ও ভুয়া দুদক চেয়ারম্যান পরিচয়ে প্রতারণার চেষ্টা করেছে। আমরা এসব ভুয়া পরিচয়ধারীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
তিনি বলেন, “আমাদের জনবল সীমিত, তবু আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জনবল বাড়ালে জনগণের ওপর ট্যাক্সের বোঝা বাড়বে—এই বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। তবে এটাও সত্য যে, আমাদের মাঝেও কিছু সীমিত দুর্নীতি রয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সবার আগে 'সরবরাহ পক্ষ' বন্ধ করতে হবে। এটি বন্ধ হলে 'চাহিদা পক্ষ' আপনা-আপনিই বন্ধ হয়ে যাবে।”
মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ।
জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আখতার হোসেন, পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় হবিগঞ্জের উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়া।
মৌলভীবাজারে গণশুনানিতে ৫৯টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গণশুনানিতে বিভিন্ন সরকারি অফিসে সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানির শিকার বা সেবা বঞ্চিত সংক্ষুব্ধ জনসাধারণ তাদের অভিযোগসমূহ মৌলভীবাজার জেলার সকল সরকারি দপ্তর প্রধানদের উপস্থিতিতে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন।
একই সঙ্গে সেবা বঞ্চিত জনসাধারণের উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে দুদক কর্তৃক তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই গণশুনানির মূল লক্ষ্য।
আসিফ