ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কথায় কথায় রাস্তা বন্ধ

নাইমা খাতুন

প্রকাশিত: ১৮:৩৪, ২৮ মে ২০২৫

কথায় কথায় রাস্তা বন্ধ

ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটে। শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের তোপের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা সরকার। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই একের পর এক আন্দোলন হয়ে আসছে। এর ধারা এখন পর্যন্ত চলমান। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের দাবি আদায়ের ও মত প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে রাজপথ। যেকোনো দাবি, হোক সেটা সঙ্গত কিংবা অসঙ্গত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতি ক্ষোভ কিংবা সরকারি কোনো দপ্তরের অনিয়ম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সংস্কারের দাবি সবকিছুই শুরু হয় রাজপথ থেকে। শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক সংগঠন, শ্রমিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ তাদের বলিষ্ঠ অবস্থান জানান দিতে বেছে নিচ্ছে রাজপথ। সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করা একটি পুরানো কৌশল। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সংগঠিত গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনগুলো শুরু  হয়েছিল রাজপথে। সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলনে রাস্তা দখল করলে জনগণ থেকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। এটি একটি সহজ এবং কার্যকরী পন্থা। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার সবচেয়ে বড় একটি কারণ হলো- দাবি আদায়ের জন্য অন্য কোনো কার্যকরী মাধ্যম বা বেশি উপযোগী পন্থা না থাকা। দীর্ঘদিন অভিযোগের পরও যখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না, সাধারণ জনগণ তখন রাজপথকেই বেছে নেন দাবি আদায়ের মাধ্যম হিসেবে। অতীতে এই পন্থায় কাক্সিক্ষত দাবি আদায় সম্ভব হয়েছে। তাই এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি। তবে এ আন্দোলনে সরাসরি ভুক্তভোগী হয় সাধারণ জনগণ। চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ শ্রমজীবী  মানুষ রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোতে অবস্থান করে। রাজধানীতে যেমন সব শ্রেণি পেশার মানুষের অবস্থান বেশি, তেমনি তাদের  জৈবিক চাহিদা পূরণে যানবাহন শিল্প কারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেশি। রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনের ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সর্বস্তরের জনগণের।
শাহবাগ, প্রেসক্লাব, সচিবালয়সহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধের ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং নগর জীবন অচল হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে পারে না। অফিসগামীসহ অন্যান্য পেশাজীবী মানুষ যথাসময়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারে না। অসুস্থ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। আর্থিক ক্ষতির শিকার হয় পরিবহন শ্রমিক ও মালিক। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সরবরাহ করা যায় না শহরগুলোতে। যেন অর্থনীতির চাকা সচল থাকে এবং জনগণের যাপিত জীবন স্বাভাবিক থাকে, সেদিকে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সব ধরনের কর্মসূচি পরিহার করা উচিত।
ময়মনসিংহ থেকে

প্যানেল

×