ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১

জনজীবনে স্বস্তি ফেরান

-

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ৭ আগস্ট ২০২৪

জনজীবনে স্বস্তি ফেরান

সম্পাদকীয়

দেশে বেশ কিছুকাল থেকেই বিরাজ করছে অস্থিরতা-সহিংসতা ও অরাজকতা। এরই একপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি পরিণত হয় সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাবেক সরকার অতিরিক্ত বল প্রয়োগের নীতি এবং আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্ত সেনা মোতায়েন করে কার্ফু জারি করে। অফিস-আদালতে ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি।

তবে সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে ছাত্রজনতার আন্দোলন রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। এরই একপর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। সম্প্রতি দেশবাসী যা প্রত্যক্ষ করছে, তা এক কথায় ভয়াবহ ও দুঃখজনক। এসবের মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন থানায় আক্রমণ করে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা, সারাদেশে সংঘাত সংঘর্ষে কমপক্ষে দেড় শতাধিক অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু, গণভবনে ব্যাপক লুটপাট, বঙ্গবন্ধু ভবনে অগ্নিসংযোগ, জাতীয় সংসদ ভবনে হামলাসহ বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এমতাবস্থায় সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার কাম্য ছিল জনজীবনের সর্বত্র শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধান করা। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বর্তমানে রাজপথে ট্র্যাফিক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ও কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। অনেক স্থানে এমনকি সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর দোকানপাটসহ উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ যারা সাবেক সরকারের অনুসারী ও সমর্থক, তারা রয়েছেন চরম ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতায়। রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে সবাইকে শান্ত থাকা এবং ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। অনুরূপ আহ্বান সেনাপ্রধানেরও। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও এক বিবৃতিতে জনজীবনের সর্বত্র শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আশা করা যায়, সর্বস্তরে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় অচিরেই শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং জনজীবনে নিরাপত্তা ফিরে আসবে। 
সাম্প্রতিক সংঘাত, বিপন্নতা দেশের সচল অর্থনীতিতে করোনা মহামারি চলাকালীন লকডাউনের চেয়েও বড় ধাক্কা দিয়েছে। যা সামাল দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বিপুল অর্থ বরাদ্দসহ অনেক সময়ের প্রয়োজন। অর্থনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সব সচল ও স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দলমত নির্বিশেষে সর্বশক্তি নিয়োগ করা আবশ্যক।

জাতীয় অর্থনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনতে হলে সর্বাগ্রে চাই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, যা জনজীবন সচল ও স্বাভাবিক রাখার জন্য অপরিহার্য। গত কয়েকদিনের নৈরাজ্যে সবচেয়ে কষ্ট ও দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। দ্রুত আইনশৃঙ্খলাসহ সর্বত্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। তবেই দেশবাসীর মধ্যে ফিরে আসবে শান্তি ও স্বস্তির সুবাতাস।

×