ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেন যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পা রাখলেও শান্তির কোনো আভাস নেই। বরং এই সংঘাত এখন রূপ নিচ্ছে এক জটিল বহুপক্ষীয় লড়াইয়ে। জাতিসংঘের মাল্টিল্যাটারাল স্যাংশন মনিটরিং টিমের এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে—উত্তর কোরিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাচ্ছে রাশিয়া, যা সরাসরি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে সরবরাহ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের ১১ সদস্যবিশিষ্ট ওই মনিটরিং টিম জানিয়েছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৯ মিলিয়ন রাউন্ড গোলাবারুদ, শতাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইল, সচল কামান এবং মাল্টিপল রকেট লঞ্চার রাশিয়ার হাতে পৌঁছেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান শুক্রবার জানায়, প্রায় ২০,০০০ কনটেইনারে এসব যুদ্ধসামগ্রী রাশিয়ান কার্গো জাহাজে বহন করে পৌঁছানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিপুল অস্ত্র মজুদের ফলে ইউক্রেনে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রুশ হামলা বেড়েছে। শুধু তাই নয়, এই সহযোগিতা এখন আর কেবল অস্ত্র সরবরাহে সীমাবদ্ধ নেই। জাতিসংঘ মনিটরিং টিম জানিয়েছে, এই চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়নে সাহায্য করছে। ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সংগৃহীত গাইডেন্স ডেটা পিয়ং ইয়ংয়ের কাছে পাঠিয়ে তাদের মিসাইল সিস্টেম আরও কার্যকর করে তুলছে মস্কো।
পাল্টা বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া পাচ্ছে রুশ বিমান প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, এন্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধযন্ত্র। এই সামরিক মৈত্রী জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাবনাকে লঙ্ঘন করেছে—এমনটি উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া সহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলো। তাদের মতে, এই গোপন সামরিক চুক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য এক ভয়ঙ্কর বার্তা বহন করছে।
সবমিলিয়ে, ইউক্রেন যুদ্ধ এখন আর শুধুই রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংঘর্ষ নয়—এটি রূপ নিচ্ছে এক জটিল এবং বিপজ্জনক বহুপক্ষীয় যুদ্ধের। শান্তির মঞ্চে ডাকা সত্ত্বেও বাস্তবে চলছে বোমার গর্জন। আর সেই গর্জনে ম্লান হচ্ছে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নৈতিকতার অস্তিত্ব।
ফরিদ
