ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ছোট সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন? জেনে নিন অন্ত্রের ক্যানসারের গোপন লক্ষণ

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৪:৪১, ২ জুন ২০২৫

ছোট সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন? জেনে নিন অন্ত্রের ক্যানসারের গোপন লক্ষণ

ছ‌বি: সংগৃহীত

অন্ত্রের ক্যানসার একটি নীরব ঘাতক, যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো অনেক সময় সাধারণ অসুস্থতার মতোই মনে হয়। তবে এসব উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা হতে পারে ক্যানসারের পূর্বাভাস। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারলে এই রোগের চিকিৎসা অনেকটাই সহজ ও সফল হয়। নিচে কোলন ক্যানসারের এমনই কিছু সাধারণ অথচ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো।

১. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন
আপনার স্বাভাবিক মলত্যাগের অভ্যাসে কোনো পরিবর্তন হলে সেটাকে অবহেলা করা উচিত নয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য চলতে থাকলে তা হতে পারে এক ধরনের সতর্ক সংকেত। অনেকেই একে খাবারে পরিবর্তন, মানসিক চাপ বা ওষুধের প্রভাব বলে ভাবেন, কিন্তু এর পেছনে গুরুতর কারণও থাকতে পারে। বারবার টয়লেটে যাওয়া, বা মলত্যাগের পরেও অসম্পূর্ণতা অনুভব করা—এই ধরণের লক্ষণকেও গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। টিউমার থাকলে ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য পালাক্রমে দেখা দিতে পারে এবং মনে হতে পারে পেট পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি।

২. মলের সঙ্গে রক্ত
মলের সঙ্গে রক্ত কখনোই ভালো লক্ষণ নয়। উজ্জ্বল লাল বা গাঢ় লাল রক্ত অনেক সময় হেমোরয়েড বা হালকা ফাটল বলে ধরে নেওয়া হয়। যদিও এটি হতে পারে, কিন্তু মলদ্বার থেকে বারবার রক্ত যাওয়া, ব্যথা বা মলত্যাগে পরিবর্তনের সঙ্গে রক্ত আসা কোলন ক্যানসারের ইঙ্গিতও দিতে পারে।

৩. ওজন হ্রাস
হঠাৎ করে অনিচ্ছাকৃতভাবে ওজন কমে যাওয়াকে অনেকে ভালো মনে করলেও, এটি হতে পারে এক ভয়ঙ্কর রোগের লক্ষণ। খাবারে পরিবর্তন ছাড়াই ওজন কমতে থাকলে সেটাকে অবহেলা করা ঠিক নয়। কোলন ক্যানসারের কারণে শরীরের শক্তির চাহিদা বেড়ে যায় বা পুষ্টি শোষণে সমস্যা হয়, যার ফলে ওজন কমে যেতে পারে।

৪. দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ক্লান্তি
চাপ, ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত কাজের কারণে ক্লান্তি অনেকেরই হয়। তবে বিশ্রামের পরেও যদি অবসাদ ও দুর্বলতা কাটে না, তাহলে তা হতে পারে কোলন ক্যানসারের লক্ষণ। শরীরের অভ্যন্তরে রক্তপাত হলে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি দেখা দেয়।

৫. পেট বা পেছনের অংশে চাকা
পেট বা পেছনের অংশে (মলদ্বার বা রেকটামে) যদি কোনো চাকা বা গাঁট অনুভব করেন, সেটিকে সাধারণ ফোলাভাব বলে অবহেলা করা উচিত নয়। এটি হতে পারে কোলন বা রেকটামের টিউমার। এ ধরনের লক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই আলট্রাসনোগ্রাম বা কোলনোস্কোপির মতো পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

অন্যান্য লক্ষণগুলো হতে পারে:

  • পেটের ক্র্যাম্প জাতীয় ব্যথা

  • পেট ফাঁপা অনুভব করা

  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও বাতাস আটকে থাকা

  • বমি হওয়া

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
উল্লেখিত যেকোনো লক্ষণ যদি তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে থাকে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ যত দ্রুত রোগ শনাক্ত হবে, তত দ্রুত এবং কার্যকরভাবে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। নিয়মিত স্ক্রিনিংও রোগ শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আবির

×