ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভিসা প্রশ্নে বিভ্রান্ত ট্রাম্প, নতুন করে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৪:০৯, ৪ জুন ২০২৫

ভিসা প্রশ্নে বিভ্রান্ত ট্রাম্প, নতুন করে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা সাক্ষাৎকার পুনরায় চালু হবে কি না—এই সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনভাবে হোঁচট খেয়েছেন যে, সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে তার মানসিক স্থিতি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একাধিক ব্যবহারকারী প্রেসিডেন্টের আচরণকে ‘বিচ্ছিন্ন’, ‘ভ্রান্ত’ এবং ‘গোলমেলে’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

বুধবার, ২৮ মে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কবে থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু হবে?” উত্তরে প্রেসিডেন্ট প্রথমে জিজ্ঞেস করেন, “On what?” সাংবাদিক পুনরায় বলেন, “Foreign student visas,” তখন ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, “For the French?” এরপর তিনি একাধিকবার ‘foreign’ শব্দটি না বুঝে বিভ্রান্তি প্রকাশ করেন এবং বলেন, “Foreign visas for what? Colleges?

একপর্যায়ে তিনি মন্তব্য করেন, “You’re off to Israel. Now you’re talking about colleges, right?” পরে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণ করতে শুরু করেন।

প্রশাসনের কড়া অবস্থান ও পটভূমি
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করেছে। এছাড়া অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই কড়াকড়ি বাড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার উত্তর স্পষ্টভাবে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রেসিডেন্টের প্রতিক্রিয়া ছিল বিভ্রান্তিকর।

ইন্টারনেটের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “And they called Biden clueless?”—অর্থাৎ বাইডেনকে 'বোধহীন' বলেছিল কারা? আরেকজন ব্যঙ্গ করে লেখেন, “His mind is gravy”—তার মস্তিষ্ক যেন তরল হয়ে গেছে।

“Dementia Don isn’t running the White House. Who is in charge?”—এমন পোস্টও দেখা যায়, যা ট্রাম্পের মানসিক সক্ষমতা নিয়েই সরাসরি প্রশ্ন তোলে।

অনেকেই সিএনএন সাংবাদিক জেক ট্যাপারকে ট্যাগ করে প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ
টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. জেনিফার মারসিয়েকা এই ঘটনাকে প্রেসিডেন্টের ‘কগনিটিভ ডিসিপ্লিন’-এর অভাব হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প নিজেকে ‘টেলিপ্রম্পটার ছাড়া স্পষ্টভাষী’ বলে পরিচিত করতে চান। কিন্তু এর ফলে তার বক্তব্য এলোমেলো ও দিকহীন হয়ে পড়ে, যা সাধারণ শ্রোতাদের জন্য বিভ্রান্তিকর।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের কথোপকথনে যুক্তির কোন পরিণতি থাকে না, চিন্তা থেকে চিন্তা লাফিয়ে বেড়ান তিনি।


এই ঘটনাটি মার্কিন রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশ্নকে সামনে এনেছে—বয়স এবং মানসিক সক্ষমতা কি রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতার কেন্দ্রে থাকা উচিত? প্রেসিডেন্টের বয়স এখন ৭৮। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনকেও একই বিষয়ে বারবার সমালোচনা করা হয়েছে। এখন সেই সমালোচনার মুখে স্বয়ং ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউস এই ঘটনার বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অনলাইন প্রতিক্রিয়া এবং বিশেষজ্ঞ মতামত স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে—আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের মানসিক সুস্থতা এক বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে।

ফরিদ

×