একদিকে যুদ্ধবিরতির আলোচনা, অন্যদিকে হামলা-পাল্টা হামলায় উত্তাল ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্র। যুদ্ধের আগুনে যেন একটুও কমেনি উত্তাপ। কিয়েভের নজিরবিহীন ড্রোন হামলার জবাবে এবার ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
বুধবার খারকিভে রাশিয়ার পক্ষ থেকে দুটি মিসাইল ও নয়টি ‘শাহেদ ড্রোন’ ছোড়া হয় বলে জানায় ক্রেমলিন। এতে একাধিক ভবনে আগুন ধরে যায়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দাবি এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
একই দিন অধিকৃত সুমি, খারকিভ এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের পাল্টা আক্রমণ প্রতিহত করার দাবিও করেছে রাশিয়া। তারা দাবি করেছে, ইউক্রেনের ছোঁড়া তিনটি ‘হিমারস’ রকেট ও ১০৯টি ড্রোন ধ্বংস করেছে তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা এবং সামগ্রিক যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে কথা বলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। এ সময় ইস্তানবুলে ইউক্রেন-রাশিয়া প্রতিনিধিদের মধ্যকার আলোচনার অগ্রগতি ও যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়েও কথা হয় বলে ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে জানান ট্রাম্প। দুই নেতার এই ফোনালাপ চলে প্রায় এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
এদিকে মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ এন্ড্রি ইয়ারমাক সাক্ষাৎ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রোবিয়ের সঙ্গে। রুশ হামলা থেকে বাঁচতে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারের আবেদন জানান তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো স্পষ্টভাবে জানায়নি, তারা ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা দেবে কি না।
তবে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পক্ষ থেকে এসেছে শক্ত বার্তা। হেগ সম্মেলনের আগে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের আগে ইউক্রেনকে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন মার্ক রট্টে। ইউক্রেনসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এতসব কূটনৈতিক তৎপরতার মাঝেও যুদ্ধ বন্ধ হচ্ছে না। বরং একে অপরকে দোষারোপ চলছে রাজনৈতিক মহলেও। জেলেনস্কিকে ‘খারাপ লোক’ আখ্যা দিয়ে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, "বিশ্বকে পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন জেলেনস্কি।" নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য।
সব মিলিয়ে যুদ্ধের ময়দানে যেমন বিস্ফোরণ, তেমনি চলছে কূটনৈতিক পর্যায়ে তীব্র বাকযুদ্ধও। যুদ্ধ শেষের কোনো আলামত নেই, বরং প্রতিদিনই নতুন করে জ্বলছে বারুদের আগুন।
মিমিয়া
