
সন্তানদের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা প্রতিটি বাবা-মায়ের দায়িত্ব। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, কিছু রোগের নীরব লক্ষণ থেকে যায় নজরের বাইরে। তেমনি একটি জিনিস হচ্ছে থ্যালাসেমিয়া, যা এক ধরনের জেনেটিক ব্লাড ডিসঅর্ডার। এটি শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে বাধা দেয়, ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে anaemia বা রক্তাল্পতা দেখা দেয়।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক এলাকায় থ্যালাসেমিয়া এক বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাবা-মায়ের মধ্যে কেউ যদি থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করে, তবে তাদের সন্তানেরও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগটি ধীরে ধীরে শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাই দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা জরুরি।
হেমাটোপ্যাথলজিস্ট ড. কুনাল শেগাল এবং ফোর্টিস হাসপাতালের ব্লাড ডিসঅর্ডার বিশেষজ্ঞ ড. সুব্রপ্রকাশ সান্যাল আমাদের জানিয়েছিলেন থ্যালাসেমিয়ার প্রাথমিক ৮টি লক্ষণ যেগুলো বাবা-মায়ের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে—
১. ফ্যাকাশে বা হলদেটে চামড়া: শিশুর ত্বক সাধারণের থেকে ফ্যাকাশে বা হলদেটে হতে পারে। ২. ক্লান্তি ও দুর্বলতা: ছোট্ট বাচ্চাটি অস্বাভাবিক ভাবে ক্লান্ত বা দুর্বল লাগতে পারে। ৩. ধীর বৃদ্ধি: বাকি শিশুর চেয়ে শরীর গড়ে উঠতে সময় নেয়। ৪. বারবার সংক্রমণ: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে বার বার অসুস্থ হয়। ৫. পেট ফোলা বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বড় হওয়া: পেটের ডান পাশে কড়া অংশ দেখা দিতে পারে। ৬. হাড়ের সমস্যা: বিশেষ করে মাথা ও মুখের হাড় দুর্বল বা বিকৃত হতে পারে। ৭. কালো বর্ণের প্রস্রাব: রক্তের ক্ষরণজনিত কারণে প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হতে পারে। ৮. মেজাজ খিটখিটে হওয়া: অক্সিজেনের ঘাটতি শিশুদের বেশি রাগী বা মেজাজ খিটখিটে করে তোলে।
ডাক্তারদের পরামর্শ, এই লক্ষণগুলো দেখতে পেলে দেরি না করে পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সময় মতো চিকিৎসা নিলে শিশুদের জীবন অনেকটাই স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।
সন্তানের সুস্থতা ও ভবিষ্যতের জন্য বাবা-মা সতর্ক থাকুন, থ্যালাসেমিয়ার নীরব সংকেতগুলো চিনে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।
মিমিয়া