
চলন্ত অবস্থায় ট্রেনে উঠানামা, ছাদে ভ্রমণ, দুই বগির সংযোগস্থল বাফারে বসা, ট্রেনের দরজার হাতলে ঝুলে যাতায়াত, রেললাইনের পাশ দিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে হাঁটা, রেললাইনে বসে থাকা, অসতর্কভাবে রেললাইন পার হওয়া এবং রেলওয়ে ওভারব্রিজ ব্যবহার না করায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
পাবনার ভাঙ্গুরায় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ৯:৩০টায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক অজ্ঞাত প্রতিবন্ধী নারীর (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ভাঙ্গুরা স্টেশন অতিক্রম করার সময় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানার আওতাধীন ভাঙ্গুরা-চাটমোহর-বড়াল ব্রিজ-গুয়াখাড়া পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার রেলপথে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের (৩ এপ্রিল) মধ্যে অন্তত ৩০টি অপমৃত্যু এবং ২টি নিয়মিত মামলা হয়েছে। এসব মৃত্যুর ঘটনায় উল্লেখযোগ্য একটি কারণ হল অসচেতনতা ও বিধিনিষেধ অমান্য করে চলাফেরা।
২০২৪ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে সেপ্টেম্বরে। ট্রেনে কাটা পড়ে নিহতদের মধ্যে ৫ জন ছিল অজ্ঞাত শিশু। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানা পুলিশ মাত্র এক মাসেই উদ্ধার করেছে ৪টি মরদেহ, যাদের মধ্যে ৩ জনই অজ্ঞাতনামা নারী।
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা (সিআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইনে হাঁটাহাঁটি করা অথবা লাইনে বসে গল্পগুজবে মশগুল থাকায় অনেকেই ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হন।”
তিনি আরও বলেন, এই বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী এবং রেলপুলিশ যৌথভাবে প্রতি মাসেই সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করছে। এছাড়াও রেলস্টেশন, রেললাইন সংলগ্ন এলাকার মসজিদ ও স্কুলগুলোতেও সচেতনতা বাড়াতে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে জনগণকে নিজ নিজ জায়গা থেকে আরও সচেতন হতে হবে।
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি জানান, “ট্রেনযাত্রী ও সাধারণ মানুষের অসতর্কতার কারণেই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।”
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চললেও, ট্রেনযাত্রা নিরাপদ করতে জনগণের মধ্যে কার্যকর সচেতনতা না এলে এই প্রাণহানির মিছিল থামবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মিমিয়া