
স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়েছে বাংলাদেশ
তরুণ জনগোষ্ঠীকে তামাকের দীর্ঘদিনের ভোক্তা বানাতে কোম্পানিগুলো যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে তা রুখতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করতে হলে মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে
স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়েছে বাংলাদেশ। একজন তরুণ হিসেবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বর্তমানে একবিংশ শতক অবধি অনেক কিছুই অবলোকনের সৌভাগ্য হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যা পাওয়া বাংলাদেশ এখন পৃথিবীতে ‘উন্নয়নের রোল মডেল।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে সোনার বাংলা। তবে এ পথে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। তবে তা অতিক্রম করা সম্ভব।
অর্থনীতিবিদগণ ‘উন্নয়ন’ বলতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়াকে বুঝিয়ে থাকেন। তবে সাধারণভাবে যে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনকেই উন্নয়ন বলে মনে করা হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ-সমতা, সুশাসন, স্বাধীনতা, সক্ষমতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি সবই উন্নয়ন ধারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। উন্নয়ন হলো একটি পদ্ধতি, যা একই সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামোগত পরিবর্তন, পরিবেশগত পরিশুদ্ধিসহ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের ইতিবাচক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা উন্নয়ন বা ইতিবাচক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি।
বিশেষত পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, আইসিটি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের মধ্যে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ উল্লেখ করার মতো। যেমনÑ কর্ণফুলী টানেল, তৃতীয় পায়রাবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি। এছাড়াও মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলেই সম্ভব হচ্ছে।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নযজ্ঞ বিশ^কে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘ জটিলতার অবসান ঘটিয়ে প্রমত্ত পদ্মার বুকে দীর্ঘ সড়ক ও রেলসেতু নির্মাণ সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নের বড় উদাহরণে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক। দাতা সংস্থাগুলো যখন এই প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সেই সময়ে পূর্ণ আত্মবিশ^াস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন– আমরা নিজস্ব অর্থে পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করব! তিনি তা করে দেখিয়েছেন। গত ২৫ জুন ২০২২ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। বিশাল এই সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য যেমন গর্বের, তেমনি বিশে^র মানচিত্রেও স্থান পেয়েছে বৈচিত্র্যময় এই পদ্মা সেতু।
সড়ক পরিবহনে ভোগান্তি কমাতে বর্তমান সরকার উদ্যোগে দীর্ঘমেয়াদি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অন্যতম। সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে এক্সপ্রেসওয়েটি। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের জন্য চালু করা হয়েছে। মাত্র ১০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই দীর্ঘস্থায়ী বা টেকসই উন্নয়ন ভাবনা সন্নিহিত ছিল। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক মূল্যবোধের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, বিশ্ব শান্তি, পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদির ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে নিঃশংসভাবে হত্যার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও পরবর্তীতে ২০০১ সাল থেকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়াদ পার করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে অভূতপূর্ব। জাতিসংঘ ঘোষিত ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ (এমডিজি) ২০০০ অর্জনে বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য দেখিয়েছে। এসডিজি অর্জনেও চলছে জোরালো বহুমুখী কর্মযজ্ঞ।
ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর উন্নয়ন দর্শনে যুক্ত করেছেন অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ভাবনা এবং নিজস্ব চিন্তাপ্রসূত বিশেষ বিশেষ উদ্ভাবনী উদ্যোগ। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশ উন্নয়নের প্রতি সমান গুরুত্ব প্রদান করেছেন। পিছিয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তকরণ ও তাদের মাঝে এর সুফল পৌঁছাতে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারপ্রধান গ্রহণ করেছেন বিশেষ সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ ও কর্মসূচি।
সর্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যে বই বিতরণসহ দরিদ্র ছাত্রদের জন্য উপবৃত্তি প্রবর্তনের মাধ্যমে এই সরকারের আমলেই প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন করা হয়েছে। প্রায় ১৪,২০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন প্রান্তিক গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এতে করে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাকালীন সময়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ভ্যাকসিনেশনে বাংলাদেশ অত্যন্ত সফল হয়েছে। উন্নয়নের মূলধারায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়নেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ডিজিটাল সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার– যার সুফল আমরা পাচ্ছি।
আমাদের গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২৫%। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। বেড়েছে মাথাপিছু আয়ও। বর্তমানে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। এ কথা সত্য যে, যুদ্ধ ও বৈশি^ক রাজনীতিতে সংকট তৈরি হওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ও নানা কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ সমস্যা পোহাচ্ছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতেও বিভিন্ন সেক্টরে প্রভাব পড়ছে। তবে সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছে। সরকার এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০২১’-এর মূলভিত্তি হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দেন।
বর্তমানে সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দৃশ্যমান। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় সবখানেই ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে জনগণের তথ্য-উপাত্ত, কাক্সিক্ষত সেবা প্রাপ্তিসহ প্রাত্যহিক জীবনযাপনসহ অসংখ্য কাজ সহজ হয়েছে। সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিল, যা বাস্তবে প্রত্যক্ষ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরিত করা হবে।
সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার চারটি ভিত্তি স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি সফলভাবে বাস্তবায়নে কাজ করছে। বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরে তরুণ প্রজন্মকে ২০৪১ সালের সৈনিক হিসেবে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত হতে হবে উল্লেখ করেছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব সমাজ নিয়ে খুবই আশাবাদী। তারুণ্যের শক্তি দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি করতে চান। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এখন অপেক্ষা উন্নত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ দেখার। আমরাও আশাবাদী, সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসবে। আমরাও দেখে যেতে পারব। এজন্য তারুণ্যের সর্বোত্তম ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি।
বর্তমান বাংলাদেশের বড় অংশের জনগোষ্ঠী কিশোর-তরুণ, যে কারণে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে বলা হয় ইয়ুথ ডিভিডেন্ট। ইউএনডিপি-এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে ৪৯% মানুষের বয়স ২৪ বা এর নিচে। অর্থাৎ, ৪৯% জনগোষ্ঠী বয়সে তরুণ। দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। মোট জনসংখ্যার ৬৬% কর্মক্ষম। তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশের রূপকার। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের কা-ারি। তরুণ জনগোষ্ঠীকে সুস্থ রাখতে হবে। কিন্তু শঙ্কা জেগেছে, আদৌ আমরা তরুণদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারব কি না! কারণ, তামাক ও মাদকের আগ্রাসনে অনেক তরুণ বিপথগামী হয়ে পড়ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে মাদকাসক্তি পরিস্থিতি উদ্বেজনক। সামাজিক অবক্ষয়সহ প্রায় সকল অপরাধের পেছনে অন্যতম প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে মাদক। গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য মতে, দেশে প্রায় কোটি মানুষ মাদকাসক্ত রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৯০% তরুণ-কিশোর। অপরদিকে, মাদকাসক্তির বড় কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে ধূমপান। ধূমপান হচ্ছে মাদকের রাজ্যে প্রবেশের মূল দরজা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাদকাসক্তদের মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগই ধূমপায়ী এবং তাদের মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ বিভিন্ন অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। যারা মাদকদ্রব্য সেবন করে তারা প্রথমে ধূমপানে অভ্যস্ত হয়। তারপর মাদকদ্রব্য সেবন শুরু করে থাকে। পরবর্তীকালে তারা গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল, সিসা, হেরোইন, কোকেনসহ বিভিন্ন মরণ নেশায় আসক্ত হয়। বর্তমানে কিশোর-তরুণদের অনেকে বন্ধুদের প্ররোচনায় ধূমপান শুরু করে ক্রমান্বয়ে এর একটি বিরাট অংশ মাদক সেবন ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।
দেশে বাড়ছে ই-সিগারেট, ভেপ ও হিটেট টোব্যাকো প্রোডাক্টসমূহের ব্যবহার। সাধারণ সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর ও সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ই-সিগারেটকে সামনে আনছে তারা। মূলত সাধারণ সিগারেটের চাইতে ই-সিগারেট ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর। অধিকাংশ মানুষ (বিশেষ করে তরুণরা) ই-সিগারেটের ক্ষতিকর দিক জানে না। ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে দেশে এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আইন, নীতি না থাকা এবং অসচেতনতা মানুষের মধ্যে প্রাণঘাতী এ সকল নেশা দ্রব্যের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার অন্যতম কারণ। যারা বর্তমানে মাদকাসক্ত রয়েছে, তাদের রোগ নির্ণয় এবং নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে সুস্থ করা এখন বড় কাজ। নতুবা তাদের মাধ্যমে নতুন মাদকাসক্ত তৈরি হবে।
মাদক ও তামাকবিরোধী আইন আছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশ থেকে তামাক নির্র্মূল করার ঘোষণা দিয়েছেন। মাদকের বিরুদ্ধেও তিনি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছেন। এসব পদক্ষেপ উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করার যে রসদ সেটাকে সমুন্নত রাখা। অর্থাৎ, তরুণদের সুরক্ষিত রাখা। সুতরাং তরুণ জনগোষ্ঠীকে তামাকের দীর্ঘদিনের ভোক্তা বানাতে কোম্পানিগুলো যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তা রুখতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করতে হলে মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আগামী প্রজন্মকে রক্ষার জন্য দায়িত্ব সবার। এক্ষেত্রে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। শিশু-কিশোর, তরুণরা ধূমপানের মাধ্যমে ভয়াবহ মাদকের নেশায় নীল হয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াক, এটা কোনো সচেতন, বিবেকবান মানুষের কখনো কাম্য হতে পারে না।
লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা, (একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দসৈনিক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস),
সাম্মানিক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা, ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টাল সার্জারি, বারডেম ও অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজ
prof.arupratanchoudhury@yaho