ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ডা. দেবী শেঠি ও নারায়ণা হাসপাতাল

ফনিন্দ্র সরকার

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ৫ মে ২০২৩

ডা. দেবী শেঠি ও নারায়ণা হাসপাতাল

.

নারায়ণা হচ্ছে একটি হাসপাতালের নাম। ভারতের কর্ণাটক প্রদেশের ব্যাঙ্গালোরে ব্যোমাচান্দা নামক একটি ছোট শহরে নারায়ণা হৃদালয় নামের হাসপাতালটি বিশ্বসেরা হৃদরোগ নিরাময় কেন্দ্র হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। যার প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বে অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিদ ডাঃ দেবী প্রসাদ শেঠি। দেবী প্রসাদ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ কন্নড় জেলার ফিন্নিগলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি বাবা-মায়ের অষ্টম সন্তান। শেঠি মেডিক্যালের ৫ম গ্রেডে অধ্যয়নকালে দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন সার্জন কর্তৃক বিশ্বে প্রথম হৃৎপিন্ড প্রতিস্থাপনের কথা শুনে কার্ডিয়াক সার্জন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯১ সালে নয় দিনব্যাপী শিশুরনি হৃৎপিন্ড অপারেশন করেন, যা ভারতের প্রথম সফল হৃৎপিন্ড অস্ত্রোপচার। তিনিই কোলকাতায় মাদার তেরেসার চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ব্যাঙ্গালোরে প্রথমে মনিপ্যাল হার্ট ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তিনি বৃহৎ পরিসরে নারায়ণা হেলথ সেন্টার নামে সংগঠন গড়ে তোলেন।

দেবী শেঠিই চেয়ারম্যান। যার অধীনে অনেক হাসপাতাল পরিচালিত হয়ে আসছে। ব্যাঙ্গালোর ছাড়াও ভারতে বিভিন্ন প্রদেশে এর শাখা রয়েছে। নারায়ণা ব্যাঙ্গালোরে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তার কিঞ্চিত বর্ণনার জন্যই কলম ধরেছি। কেননা, বাংলাদেশের মানুষ বিশেষত হৃদরোগ পরিষেবার জন্য ভারতের ব্যাঙ্গালোরে নারায়ণা হাসপাতালের দ্বারস্থ হন। এছাড়াও চেন্নাই, ভেলোরে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকে। তবে হৃদরোগ নিরাময়ের জন্য ব্যাঙ্গালোরেরনারায়ণার প্রতি দুর্বলতা অনেক বেশি। কারণ, ভগবান খ্যাত ডা. দেবী প্রসাদ শেঠি এখানেই রোগী দেখেন। বাংলাদেশের অধিকাংশ সামর্থ্যবানরাই দেবী শেঠির কাছে যেতে আগ্রহী হন। দেবী শেঠির বিষয়ে একটি কথা প্রচলিত যে, তিনি অত্যন্ত মানবিক এবং ক্ষেত্র বিশেষ অনেক কম খরচে কিংবা বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। সামর্থ্য না থাকা সত্ত্বেও কম খরচে চিকিৎসা নেওয়ার লোভ সামলাতে না পেরেই শুধু যাতায়াত থাকা খাওয়াসহ চিকিৎসার জন্য সামান্য কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে ব্যাঙ্গালোরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

কেন ব্যাঙ্গালোরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই, তার আগের ঘটনা উল্লেখ না করে পারছি না। গত ফেব্রুয়ারি ২০২৩ আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে প্রচ্ছদ শিল্পী কবি বন্ধু হাবিব সিদ্দিকীর সঙ্গে তার কর্মক্ষেত্র নারায়ণগঞ্জের সমবায় মার্কেটের ৪র্থ তলায় উপস্থিত হই। আমিও নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। ২১এর বই মেলায় প্রকাশিতব্য দুটো বইয়ের প্রচ্ছদ শিল্পী হাবিব ভাই মেটার রেডি করে রাখেন। প্যানড্রাইভে গ্রহণ করার জন্যই সেখানে যাওয়া। কথাবার্তা বলার ফাঁকে হঠাৎ বুকে প্রচন্ড অসহনীয় ব্যথা শুরু হয়ে যায়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলে হাবিব সিদ্দিকী তার দুই সহযোগীসহ প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে পরিবারের সদস্যদের টেলিফোনে জানিয়ে দেওয়া হলে তারা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসে। স্ত্রী, শাশুড়ি অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরা নারায়ণগঞ্জ বালুর মাঠে ইসলামিক হার্ট সেন্টারে আমাকে নেয়। সেখানে ইসিজি করে জানা যায়, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলে সেখানে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয়। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে শ্যালিকা মিতালী রানী কর্মকার ভর্তির সকল ব্যবস্থা করে রাখে আগেই। জাতীয় হৃদরোগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ নুর আলম চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করে অতিদ্রুত চিকিৎসা সেবা দিয়ে শঙ্কামুক্ত করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, হার্টে তিনটি ব্লক। জরুরিভিত্তিতে একটিতে রিং বসানো হয়। বাকি দুটোতেও পরবর্তী মাসের মধ্যে রিং বসানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এমতাবস্থায় দিন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা উপলক্ষে থাকতে হয়। এর মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জয়পুরহাট- আসনের সংসদ সদস্য আমাকে হাসপাতালে দেখতে যান।

ঢাকার চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে পারিবারিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাকি চিকিৎসা ব্যাঙ্গালোরের দেবী শেঠির কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করি। ঢাকার চিকিৎসা সেবার প্রতি যথেষ্ট সন্তুষ্ট হওয়ার পরও ভারতে রওনা দেই ২০ মার্চ ২০২৩। সহযাত্রী হিসেবে স্ত্রী শিখা রানী স্ত্রীর বড় ভাই চন্দন কর্মকার ছিলেন। স্ত্রীর পাসপোর্ট জটিলতার কারণে ভারত যাত্রায় একটু বিলম্ব হয়। ২০ মার্চ শ্যামলী বাসে হরিদাসপুর বর্ডার দিয়ে কোলকাতা যাই। বেনাপোলে নানা বিড়ম্বনার শিকার হই। দীর্ঘ ঘণ্টা সময় লাগে বর্ডার পার হতে। বিষয়ে অন্য একদিন লেখার ইচ্ছা রইল। ২১ তারিখে বিকেল ৩টায় কোলকাতা পৌঁছে দমদম বিমান বন্দরের কাছে একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করে ২২ তারিখে ভোর .৩০ মিনিটের ইন্ডিগোর ফ্ল্যাইটে উঠে .৪৫ মিনিটে ব্যাঙ্গালোরে পৌঁছে যাই। ব্যাঙ্গালোর বিমানবন্দর থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে নারায়ণা হাসপাতালের অবস্থান। ভারতীয় ১৫শ টাকায় ভাড়া করা প্রাইভেট কারে দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে যাই গন্তব্যস্থলে। নারায়ণা হাসপাতাল ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য লজ, গেস্ট হাউস বা হোটেল। ৮০০ টাকায় (প্রতিদিন) একটি লজে উঠি। ছোট দুটি কামড়ায় ২টি খাট, একটি টয়লেট, একটি কিচেন। নিজেদের রান্না করে খাবার ব্যবস্থা রয়েছে। অঞ্চলে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি।

জীবনযাত্রার ব্যয় আকাশচুম্বী। ২২ মার্চ লজে রেস্ট নিয়ে পরদিন ২৩ মার্চ নারায়ণা হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন করতে যাই। নিয়মমাফিক প্রথমে রোগীকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। ভারতীয় ১০০ রুপিতে রেজিস্ট্রেশন করে চিকিৎসা যাত্রা শুরু করি। নারায়ণার নিয়মনীতি বুঝে ওঠা খুবই মুশকিল। কারণ, এখানে বাংলা ভাষার প্রচলন নেই। ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে ডাক্তার পর্যন্ত অধিকাংশ বাংলা জানেন না। ভারতীয় বহুল প্রচলিত হিন্দিও এখানে প্রচলিত নয়। এখানকার স্থানীয় কর্ণাট ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যা বেশি। অথচ আশ্চর্যের বিষয়, এখানার শতকরা ৮৫% ভাগ রোগী বাঙালি। এর মধ্যে ৮০% বাংলাদেশী। হেল্পডেস্ক নামক একটি সেল রয়েছে। বাংলাদেশী রোগীদের সাহায্যের জন্য বাংলা ভাষা জানা কর্মী রয়েছেন। তাদের সাহায্য পাওয়াটা খুবই কষ্টকর। কারণ, বাঙালি রোগীর তুলনায় সহযোগিতাকারীর সংখ্যা খুব কম। সুবিধা এই যে, আমার স্ত্রীর বড় ভাই চন্দনদা কর্ণাট, হিন্দি, ইংরেজি ভালই জানেন। তাই যাবতীয় ফরমালিটিস শেষ করতে বেশি সময় লাগেনি। তবে এর মাঝখানে ছুটির ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলাম। ইমার্জেন্সি বিভাগ ছাড়া এখানে ছুটির সময় সব  বন্ধ থাকে। এমনকি ঔষধের দোকানও, যা খুবই আশ্চর্যজনক। দেবী শেঠিকে দেখাব। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, দেবী শেঠিকে প্রথম দফায় দেখানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে ডাঃ পোনেত ভার্মাকে দেখাতে হলো। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন কর্মী পোনেত ভার্মার নাম লিখে দিলেন, কাউন্টারে ৭০০ টাকা জমা করে সিরিয়ালে দাঁড়াতে হলো। ২৩ মার্চ বিকেলে ডা. পোনেত ভার্মাকে দেখাতে সক্ষম হলাম।

তিনিও ভাল ডাক্তার। একজন অভিজ্ঞ কার্ডিয়াক সার্জন। কিছু পরীক্ষা দিলেন। সব পরীক্ষা করতে সময় লেগে যায় ২দিন। ১৫,৫০০ রুপি ক্যাশ কাউন্টারে আগেই জমা দিতে হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। পরীক্ষা শেষে রিপোর্ট নিয়ে হাজির হই ডা. পোনেত ভার্মার কাছে। তিনি সব রিপোর্ট দেখে শারীরিক অনেক সমস্যা চিহ্নিত করলেন। প্রথমেই তিনি হার্টে আরও দুটো রিং পড়ানোর পরামর্শ দিলেন জরুরি ভিত্তিতে। যে পরামর্শ আমাকে ঢাকার ডাঃ নুর আলম সাহেবও দিয়েছিলেন। অথচ এই ভেবেই এখানে এসেছিলাম যেন আমাকে আর রিং পড়াতে না হয়, ঔষধেই সেরে যাবে এমন বিশ্বাস কিংবা ভরসা ছিল মনে। কিন্তু সে বিশ^াস ভরসায় ছেদ পড়ে গেল ডাঃ ভার্মার কথায়। ডাঃ ভার্মাকে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন আমাকে ডাঃ দেবী শেঠির কাছে রেফার করেন। চন্দনদা খুব চমৎকারভাবে স্থানীয় ভাষায় বিষয়টি উপস্থাপন করায় ডাঃ ভার্মা দেবী শেঠির কাছে রেফার করলেন। তিনি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে লিভার বিশেষজ্ঞ কিডনি বিশেজ্ঞর কাছেও রেফার করলেন। বলে রাখা ভাল, নারায়ণা হেলথের  অধীনে এখানে আরও কয়েকটি চিকিৎসালয় রয়েছে। মজুমদার শাহ্ মেডিক্যাল সেন্টার, ট্রমা সেন্টার এবং চক্ষু হাসপাতাল। মজুমদার শাহ্তে অত্যাধুনিক সব ধরনের পরীক্ষাগার বা ল্যাব রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে রোগী ভর্তি করা হয়।

আমার প্রধান সমস্যা হার্টের। তাই দেবী শেঠিকে কখন দেখাব সেজন্য অস্থির। চিকিৎসার ফাইল নিয়ে হাসপাতালের মূল ফটকের বেজমেন্টে দেবী শেঠির কাউন্টার অর্থাৎ এই কাউন্টারে ফাইল জমা দিতে হবে। এই ফাইল পাঠিয়ে দেওয়া হয় দেবী শেঠির কাছে। তিনি ফাইল পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেন। কোন্ কোন্ রোগীকে তিনি দেখবেন। প্রতিদিন গড়ে নতুন পুরানো মিলিয়ে ১০০ রোগী দেখেন। সকাল ১০টা থেকে (মধ্যাহ্ন বিরতি ছাড়া) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। আমি ২৫ মার্চ বিকেল .৩০ মিনিটে ডাঃ দেবী শেঠিকে দেখানোর সৌভাগ্য অর্জন করি। হাসপাতালের মূল ভবনের ৫ম তলায় দেবী শেঠির বিশালাকারের চেম্বার। পাশেই রয়েছে বড় রকমের অপেক্ষমাণ রুম। সঙ্গে ছিল স্ত্রী তার বড় ভাই চন্দনদা। ফাইল বাংলাদেশের এনজিও রিং পরানোর ক্যাসেট পর্যালোচনা করে তিনিও ডাঃ পোনেত ভার্মার কথারই পুনরাবৃত্তি করেন। আর কোনো উপায় নেই রিং পরতেই হবে। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী, ¤্র এবং অপরিসীম ধৈর্যশীল একজন ডাক্তার। পরম মমতার সঙ্গে কথাবার্তা পরামর্শ দিয়ে রোগীকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করে তোলেন। তার হাতের স্পর্শেই যেন অর্ধেক ভাল হয়ে যায় রোগী। তিনি ডাঃ উদয় বি খলনকারের নিকট রেফার করেন। ডাঃ উদয় বি খলনকার দেবী শেঠির সমপর্যায়ের একজন চিকিৎসক। ডাঃ সিনিয়র কার্ডিয়াক সার্জন। ডাঃ দেবী শেঠির মতোই বহুবিধ পুরস্কারে ভূষিত। ডাঃ উদয় বি খলনকার হার্টস্ক্যান পরীক্ষার সুপারিশ করলেন। মজুমদার শাহ্তে গিয়ে এই পরীক্ষা করতে ১৫,০০০ রুপি খরচ হয়।

হার্টস্ক্যান রোগীদের জন্য এটা চূড়ান্ত পরীক্ষা বলে জানা যায়। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখানো হয় ডাঃ উদয় খলনকারকে। তিনিও আমাকে রিং পরানোর কথাই পুনর্ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, ঢাকার ডাঃ নুর আলম সাহেব যা বলেছেন, একই কথা ভারতের বিখ্যাত ডাঃ দেবী শেঠিও বলেছেন। ঢাকায় যথাসময়ে যথার্থ চিকিৎসা হয়েছে বলেও দেবী শেঠি উল্লেখ করেন। তিনি ডাঃ নুর আলমেরও প্রশংসা করেন।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে হার্টে রিং বসাতে প্রস্তুতি গ্রহণ করি। এই রিং পরাতে কত খরচ হবে, সে বিষয়ে দেবী শেঠিজী খুব কম খরচের কথা বললেও পরবর্তীতে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়েছে। নারায়ণায় একটি চ্যারিট্যাবল সেকশন আছে, সেটার চার্জে রয়েছেন লক্ষ্মী দেবী। লক্ষ্মী দেবী দেবী শেঠির শাশুড়ি। তিনিই হার্টের বাইপাস, ওপেন হার্ট, রিং বসানোসহ যাবতীয় সার্জারির খরচ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মালিক। দেবী শেঠি এখানেই পাঠান যারা প্যাকেজ অর্থ দিতে অক্ষম। লক্ষ্মী দেবী কারও ক্ষেত্রে খুবই মানবিক, আবার কারও ক্ষেত্রে খুবই অমানবিক। আসলে কাকে কত টাকা কমাতে হবে তার একটা সাংকেতিক নির্দেশনা দেবী শেঠিই দিয়ে থাকেন। চিকিৎসার জন্য এমন দরদাম সিস্টেমটা মোটেও ভাল লাগেনি। এতে একটা বৈষম্যমূলক বিষয় ফুটে ওঠে। তবে খরচ যেটাই হোক চিকিৎসা সেবার মান খুবই ভালো। হাসপাতালের সবই সুন্দর শৃঙ্খলে আবদ্ধ। পরিচ্ছন্নতার দিক থেকেও সর্বোত্তম। তবে বিদেশী রোগীদের বড় ধরনের অপারেশনে বিল পে করতে হয় ডলারে। এটা খুবই অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হয়।

ডলার সংকটকালে বিশেষ করে বাংলাদেশী রোগীদের জন্য খুবই বিড়ম্বনার। আগে জানা না থাকলে অনেককে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। কেননা, ডলারকে ভারতীয় রুপি করলে আবার রুপি দিয়ে ডলার ক্রয় করতে হবে। ডলার ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্যের মধ্যে বিড়াট ব্যবধান রয়েছে। ভারত বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। কেন মার্কিন ডলারকে এত গুরুত্ব দিতে হবে? বাংলাদেশী নাগরিকগণ চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে রুপিতে লেনদেন করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

নারায়ণা হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। হৃদরোগ ছাড়াও অন্যান্য যেমন লিভার, কিডনি নিউরো ডাক্তার দেখিয়েছি। প্রত্যেক জায়গায় ভাল সেবা পেয়েছি। ভারতীয় ডাক্তারদের আচার-ব্যবহার অত্যন্ত মানবিক। তাদের ভদ্রতায় যে কোনো মানুষ মোহিত হবে। রোগীদের তারা অসাধারণ সম্মান প্রদর্শন করেন। বাংলাদেশ এর বিপরীত। যে কারণে এখানকার মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারতমুখী হন।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক

[email protected]

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার