
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র ইসরায়েল বরাবরই পশ্চিমা বিশ্বের শক্তিশালী সমর্থন পেয়ে আসছে। তবে সেই পশ্চিমাদেরই অন্যতম প্রধান শক্তি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক বরাবরই জটিল ছিল, বিশেষ করে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে। প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একটি পুরনো মন্তব্য সম্প্রতি এই সম্পর্কের বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে।
দীর্ঘ ৭০ বছরের শাসনকালেও রানি এলিজাবেথ কখনও ইসরায়েল সফর করেননি। এমনকি তাঁর শাসনামলে কোনো ইসরায়েলি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বাকিংহাম প্যালেসে প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে যুক্তরাজ্যের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লেমি ও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সারের মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি গোপন বৈঠক সামনে আসার পর।
বৈঠকটি নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধী দলের একাধিক রাজনীতিক বৈঠকটির সমালোচনা করেছেন। অনেকে এর নেপথ্যে ব্রিটিশ রাজপরিবারের পুরনো মনোভাবকেই দায়ী করছেন।
ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন এক সময় প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ‘রানি এলিজাবেথ কখনোই ইসরায়েলকে ইতিবাচকভাবে দেখতেন না। তিনি মনে করতেন, প্রত্যেক ইসরায়েলি হয় সন্ত্রাসী, না হলে সন্ত্রাসীর সন্তান।’ ওই মন্তব্য তিনি করেন হাইফার টেকনিয়ন ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে।
রানির শাসনকালে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করতে না পারার বিষয়টিকে কূটনৈতিকভাবে গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। এই মনোভাবের পেছনে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে বলেও মত বিশ্লেষকদের। ১৯৪০-এর দশকে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকা ফিলিস্তিনে ইহুদি চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা এবং ব্রিটিশ সেনাদের ওপর হামলার ঘটনা ব্রিটিশ রাজপরিবারে ইসরায়েলবিরোধী মনোভাবের জন্ম দেয় বলে ধারণা করা হয়।
রানির ইসরায়েলবিরোধী মনোভাবের আরেকটি দৃষ্টান্ত ১৯৮৪ সালের জর্ডান সফরে উঠে আসে। সেখানে অবস্থানকালে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান পশ্চিম তীরের আকাশে ওড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে রানি মন্তব্য করেছিলেন, ‘এটি ছিল এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।’
বিশ্লেষকদের মতে, রাজপ্রাসাদের নিষেধাজ্ঞাগুলো শুধু প্রটোকলের বিষয় ছিল না, বরং ছিল সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বার্তা। অনেকেই যদিও এসব খোলাখুলিভাবে বলতেন না, তবে বাস্তবতা হিসেবে তা স্বীকার করতেন, যেমন স্বীকার করেছেন রিভলিন নিজেও।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=NH5YZjZx6gM
রাকিব