
একদিকে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের আশঙ্কা, অন্যদিকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জাতীয় ঐক্যের তীব্র প্রয়োজন। এমন সময় কারাগারে বন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি নিয়েও শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় সংকট নিরসনে ইমরান খান হতে পারেন ‘একতা’র মুখ। তাই প্রশ্ন উঠছে,ভারতকে রুখতেই কি এবার মুক্তি পেতে যাচ্ছেন ইমরান খান?
ভারতের সম্ভাব্য হামলার গুঞ্জন যখন পাকিস্তানে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবি জোরালো হচ্ছে। সমর্থকদের মতে, ইমরান খানই একমাত্র নেতা যিনি এক ডাকে পুরো জাতিকে এক করতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) মনে করছে, ভারতের বিজেপি সরকারের হুমকি-ধমকি ও যুদ্ধের প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে ইমরান খানের মুক্তিই হতে পারে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ। দলটি বলছে, ইমরান খানকে মুক্তি দিয়ে সবার উদ্দেশে ঐক্যের ডাক দেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
এর মধ্যে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ নানা প্রতিশোধমূলক অবস্থান প্রকাশের পর, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট সোমবার জরুরি সিনেট অধিবেশন ডাকে। সেখানে সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদলের আইনপ্রণেতারাও ভারতের তীব্র সমালোচনা করেন। একইসাথে ইমরান খানের মুক্তির দাবিও ওঠে।
পিটিআই সিনেটর সৈয়দ আলী জাফর অধিবেশনে বলেন, “মানুষ জানে মোদির নাটকের চিত্রনাট্য কীভাবে তৈরি হয়। ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, এই সংকটে ইমরান খানের মুক্তি জরুরি।
এই জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে ইমরান খানের উপস্থিতি বিশ্ববাসীর কাছে একটি শক্ত বার্তা পাঠাবে যে পাকিস্তান ঐক্যবদ্ধ। পিটিআই’র মতে, এতে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের অবস্থান আরও গ্রহণযোগ্য হবে।
সিনেটর ও বিরোধীদলীয় নেতা শিবলি ফারাজও একই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “ইমরান খানকে টেলিভিশনে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিলে তিনি মিনার-ই-পাকিস্তানে বিশাল সমাবেশ এবং ভারত সীমান্তে পদযাত্রার ডাক দিতে পারেন। তার এক ডাকে এক কোটিরও বেশি মানুষ জড়ো হবে।”
পিটিআই-এর আশঙ্কা, রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে বাইরের শক্তিগুলো সুযোগ নিতে পারে। সরকার ও বিরোধী উভয়পক্ষই একমত যে, ভারত এই উত্তেজনা সৃষ্টি করে কাশ্মীর ইস্যু থেকে আন্তর্জাতিক মনোযোগ সরাতে চাইছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিভাজন সত্ত্বেও পাকিস্তানের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ভারতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তবে ইমরান খানের মুক্তি দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, ইমরান খানকে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।
সূত্র:https://tinyurl.com/8wur2m8k
আফরোজা