
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বের সামরিক শক্তি পরিমাপের অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে পরমাণু অস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। ৩০-৪০ বছর আগে যেখানে এই অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত ছিল, বর্তমানে তা অনেক বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, আজও বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের প্রায় ৯০ শতাংশের মালিক যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এছাড়া, আরও সাতটি দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী, যার মধ্যে এশিয়ার তিনটি দেশ—ভারত, চীন এবং পাকিস্তান—প্রধান।
ভারতের পারমাণবিক শক্তি
২০২৩ সালের তথ্যমতে, ভারতের কাছে প্রায় ১৫০ থেকে ১৬০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি প্রথমে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হলেও ১৯৭৪ সালের পর তা সামরিক উদ্দেশ্যে বিস্তার লাভ করে। ওই বছরই 'স্মাইলিং বুদ্ধ' কোড নেমে ভারত প্রথম পরমাণু পরীক্ষা চালায়। পরবর্তীতে, ১৯৯৮ সালে ভারতের 'অপারেশন শক্তি' কোড নেমের অধীনে ৫টি পরমাণু পরীক্ষা চালানো হয়, যা দেশের ফিউশন এবং থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্রের সক্ষমতা প্রদর্শন করে। এই পরীক্ষা ভারতকে একটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ভারতের নিউক্লিয়ার ডকট্রিনে রয়েছে 'নো ফার্স্ট ইউজ' নীতি, অর্থাৎ তারা প্রথমে কোনো সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না, তবে পরমাণু হামলার শিকার হলে শক্তিশালী প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত।
চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকীকরণ
চীন বর্তমানে তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণ এবং সম্প্রসারণে ব্যাপক জোর দিচ্ছে। ২০২৩ সালের হিসাবে, চীনের কাছে প্রায় ৪১০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। এই অস্ত্রগুলি ল্যান্ড বেজড ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং সি-বেজড মিসাইলের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। ১৯৬৪ সালে চীন তার প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় এবং পঞ্চম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে চীন তার অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা
পাকিস্তানও তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার বৃদ্ধি করছে। ২০২৩ সালের তথ্যমতে, পাকিস্তানের কাছে ১৬৫ থেকে ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে শুরু হয় এবং আজ এটি একটি শক্তিশালী পারমাণবিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
মারিয়া