ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

ঘণ্টার কাজ এখন মিনিটে! বর্তমানে সেরা এই ভিডিও এডিটিং এআই টুলগুলোর ব্যাপারে জেনে নিন!

প্রকাশিত: ১০:২৬, ২৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:২৬, ২৩ জুন ২০২৫

ঘণ্টার কাজ এখন মিনিটে! বর্তমানে সেরা এই ভিডিও এডিটিং এআই টুলগুলোর ব্যাপারে জেনে নিন!

ছবি: সংগৃহীত

২০২৫ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ধারাবাহিক অগ্রগতির সাথে ভিডিও এডিটিং জগতে প্রযুক্তি ও সৃজনশীলতার এক মোড়বদলের সময় চলছে। যেখানে অনেক এআই টুল শুধুই অতিরিক্ত প্রচারণা বা বিক্ষিপ্ত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, সেখানে কিছু নির্দিষ্ট টুলস সত্যিই পেশাদার এডিটরদের কাজকে দ্রুততর ও সহজতর করে তুলছে।

অ্যামস্টারডাম-ভিত্তিক পরিচালক ও প্রযোজক বাস গুসেনস, যিনি নেটফ্লিক্স ও প্রিমিয়াম রিয়েল এস্টেট ব্র্যান্ডের জন্য কাজ করেন, সম্প্রতি এক পোস্টে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তাঁর মতে, সৃজনশীল কাজের পাশাপাশি অনেক পুনরাবৃত্ত কাজ রয়েছে যা সময়সাপেক্ষ—যেমন হোয়াইট ব্যালেন্স ঠিক করা। এসব কাজ যদি এআই করে দিতে পারে, তাহলে নির্মাতারা আরও বেশি সময় দিতে পারবেন গল্প বলার গভীরতায়।

বাস গুসেনসের মতে, এআই সৃজনশীলতাকে কমিয়ে দেবে না; বরং তার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলবে। ফলে প্রযুক্তিগত ও সৃজনশীল দক্ষতার সংমিশ্রণ একান্ত জরুরি হয়ে পড়বে।

নিচে এমন ছয়টি এআই-চালিত ভিডিও এডিটিং টুলের তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলো ২০২৫ সালে প্রমাণিতভাবে কার্যকর এবং ব্যবহারযোগ্য:

১. অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো ও আফটার ইফেক্টস (অ্যাডোবি সেনসেই) অ্যাডোবি সেনসেই-এর মাধ্যমে প্রিমিয়ার প্রো এবং আফটার ইফেক্টস-এ স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনেক সময়সাপেক্ষ কাজ করা যায়। প্রিমিয়ার প্রো-তে অটো রিফ্রেম, ফিলার শব্দ শনাক্তকরণ এবং সিন এডিট ডিটেকশন উল্লেখযোগ্য ফিচার। আফটার ইফেক্টস-এ রোটো ব্রাশ ২ এখন এআই-চালিত এজ ডিটেকশনের মাধ্যমে আরও কার্যকর।

২. ডা ভিঞ্চি রিজলভের নিউরাল ইঞ্জিন (ব্ল্যাকম্যাজিক ডিজাইন) কালার গ্রেডিংয়ের জন্য খ্যাত রিজলভে এখন নিউরাল ইঞ্জিন সংযুক্ত হয়েছে। এতে রয়েছে ফেস ডিটেকশন, স্মার্ট রিফ্রেমিং ও স্পিড ওয়ার্প রিটাইমিং, যা আরও মসৃণ স্লো মোশন তৈরি করতে সক্ষম। অবাঞ্ছিত অবজেক্ট রিমুভ করাও এখন কয়েক ক্লিকেই সম্ভব।

৩. হেইএডি.এআই (HeyEddie.ai) ২০২৫ সালের শুরুতে চালু হওয়া হেইএডি.এআই মূলত ইন্টারভিউ-ভিত্তিক ভিডিওর রাফ কাট তৈরি করতে সহায়ক। এতে প্রম্পট-ভিত্তিক ইউজার ইন্টারফেস আছে, যা দিয়ে ব্যবহারকারী চাইলে "ছোট সংক্ষিপ্ত সংস্করণ" বা "দ্রুত হুক" দিতে পারে এবং তাৎক্ষণিকভাবে একটি রাফ কাট পায়। প্রিমিয়ার প্রো, ডা ভিঞ্চি রিজলভ এবং ফাইনাল কাট প্রোতে এক্সপোর্টও করা যায়।

৪. ডেসক্রিপ্ট (Descript) যারা ইন্টারভিউ, পডকাস্ট বা শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করেন, তাদের জন্য ডেসক্রিপ্ট একটি আদর্শ টুল। এটি ভিডিওকে টেক্সট ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে এডিট করতে দেয়। “ওভারডাব” নামক ফিচার দিয়ে স্পিকারের কণ্ঠস্বর কৃত্রিমভাবে ক্লোন করে ভুল সংশোধন করা যায়।

৫. টোপাজ ভিডিও এআই (Topaz Video AI) টোপাজ এমন একটি টুল যা ভিডিওর গুণগত মান উন্নত করতে বিশেষভাবে কার্যকর। এতে ফ্রেম ইন্টারপোলেশন, ডি-নয়েজিং, আপস্কেলিং ও ডিব্লারিংয়ের মতো ফিচার আছে। যারা দুর্বল বা পুরাতন ফুটেজকে উদ্ধার করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত সমাধান।

৬. কালারল্যাব এআই (Colourlab AI) বিশ্ববিখ্যাত কালারিস্ট দাদো ভালেনটিচের তৈরি কালারল্যাব এআই স্মার্ট কালার গ্রেডিং অ্যাসিস্ট্যান্স সরবরাহ করে। এতে এলইউটি (LUT) ম্যাচিং ও লুক ট্রান্সফার ফিচার রয়েছে, যা বিভিন্ন ক্যামেরা বা আলোর পরিবেশে ধারাবাহিক রং বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ডা ভিঞ্চি রিজলভের সাথে সংযুক্ত হয়ে কাজ করে।

২০২৫ সালে ভিডিও এডিটিংয়ে এআই এখন আর শুধু প্রাসঙ্গিক নয়—এটি অপরিহার্য। সবচেয়ে ভালো টুলগুলো এমন যা সৃজনশীল প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সময় বাঁচিয়ে নির্মাতাকে সৃজনশীলতায় মনোযোগ দিতে সাহায্য করে।

বাস গুসেনস যেভাবে বলেছেন, ভবিষ্যতের এডিটিং হবে মেশিন-নির্ভর নয়, বরং মেশিন-সহযোগিতাপূর্ণ। সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও উজ্জ্বল করার জন্যই এআই এসেছে এবং সেটি ইতোমধ্যে বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে।

আবির

×