
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বেগুন উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে ভারত। ‘বেগুন’ বা ‘বাইঙ্গন’ নামে পরিচিত এই সবজিটি ভারতজুড়ে নানা রূপে রান্নায় ব্যবহৃত হয় এবং এটি শুধু একটি খাদ্য নয়—ভারতের আঞ্চলিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ভারতের বার্ষিক উৎপাদন:
ভারত বছরে প্রায় ১.২৯ কোটি টন বেগুন উৎপাদন করে, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এই বিপুল উৎপাদনের পেছনে রয়েছে অনুকূল জলবায়ু, কৃষকদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেগুনের চাহিদা।
উৎপাদনকারী শীর্ষ রাজ্যগুলো:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, বিহার এবং অন্ধ্র প্রদেশে ব্যাপকভাবে বেগুন চাষ হয়। এই সবজিটি গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল—উভয় ঋতুতেই চাষ করা হয়। বেগুন ভাজা, ভর্তা (যেমন—বাইঙ্গন ভর্তা), স্টাফড বা কারিতে রূপান্তরিত হয়ে প্রতিদিনের খাদ্যে জায়গা করে নেয়।
বিশ্বের শীর্ষ ৫ বেগুন উৎপাদনকারী দেশ (২০২৩–২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী):
র্যাংক- দেশ বার্ষিক উৎপাদন (মিলিয়ন মেট্রিক টন)
১ ভারত ১২.৯
২ চীন ১১.৫
৩ মিশর ১.৩
৪ তুরস্ক ০.৮
৫ ইন্দোনেশিয়া ০.৫
শীর্ষ দেশগুলোর বিস্তারিত:
১. ভারত
বিশ্বে বেগুন উৎপাদনে ভারতের অবস্থান প্রথম। দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই বেগুন চাষ হয়। গোল, লম্বা, বর্ণময় ও হাইব্রিড—বিভিন্ন জাতের বেগুন উৎপন্ন হয়। এটি পুষ্টিকর, সহজলভ্য এবং প্রায় প্রতিটি ভারতীয় ঘরের রান্নায় ব্যবহৃত হয়।
২. চীন
চীন বছরে প্রায় ১.১৫ কোটি টন বেগুন উৎপাদন করে। চীনা রান্নায় বেগুন রসুন, সয়া সস এবং ব্ল্যাক বিন সস দিয়ে রান্না হয়। চীন হাইব্রিড জাত ব্যবহার করে এবং এশিয়ান সবজি রপ্তানিতেও সমৃদ্ধ।
৩. মিশর
মিশর বছরে ১৩ লক্ষ টন বেগুন উৎপাদন করে। মধ্যপ্রাচ্যীয় রান্না যেমন বাবা গানুশ এবং ভাজা সালাদে বেগুন ব্যবহার হয়। মূলত নীল নদের ডেল্টা অঞ্চলে এটি বেশি চাষ হয়।
৪. তুরস্ক
তুরস্কে প্রতি বছর ৮ লক্ষ টনের মতো বেগুন উৎপাদিত হয়। বিখ্যাত তুর্কি পদ ‘ইমাম বাইয়ালদি’ (স্টাফড বেগুন) ও গ্রিলড ‘পাতলিজান’-এ এটি ব্যবহৃত হয়।
৫. ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়া বছরে প্রায় ৫ লক্ষ টন বেগুন উৎপাদন করে। দেশের বিভিন্ন অংশে ছোট চাষিদের মাধ্যমে চাষ হয় এবং বেগুন ব্যবহার হয় কারি, সাম্বাল ও স্টার-ফ্রাইয়ে।
বেগুন নিয়ে মজার তথ্য:
বেগুন আসলে একটি ফল:
বেগুন সবজি হিসেবে খাওয়া হলেও, এটি বোটানিক্যালি একটি বেরি জাতীয় ফল।
রঙের বৈচিত্র্য:
বেগুন শুধু বেগুনি নয়, সবুজ, সাদা, হলুদ বা ডোরা দাগযুক্ত বর্ণেও হয়।
ভারতে এর প্রাচীন ইতিহাস:
প্রায় ২০০০ বছর আগে ভারতেই বেগুন গৃহপালিত হয় বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর:
বেগুনের খোসায় থাকা নাসুনিন নামক যৌগ কোষ রক্ষা করে।
GI ট্যাগধারী জাত:
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের 'ভাঙ্কায়া' এবং মহারাষ্ট্রের 'সোলাপুর বেগুন' জিআই (Geographical Indication) ট্যাগ পেয়েছে।
তথ্যসুত্রঃ jagranjosh.com
নোভা