
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশি খাবার তালিকায় বহুল ব্যবহৃত একটি উপাদান হলো মুসুর ডাল। এটি শুধু রুচিসম্মতই নয়, একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য ডালের তুলনায় মুসুর ডালে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু এই ডাল সবার জন্য উপযোগী নয়। কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।
এক কাপ মুসুর ডালে কী থাকে?
পুষ্টিবিদদের তথ্যমতে, এক কাপ রান্না করা মুসুর ডালে থাকে প্রায়: ১৮০ ক্যালোরি, প্রায় ১০ গ্রাম প্রোটিন, ৬ গ্রাম খাদ্যআঁশ (ফাইবার), ভিটামিন বি, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক এবং ফোলেট।
প্রোটিনের প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে মুসুর ডাল মাছ-মাংসের একটি আদর্শ বিকল্প হিসেবেও বিবেচিত হয়, বিশেষত নিরামিষভোজীদের জন্য।
যাদের মুসুর ডাল খাওয়া উচিত নয়
যদিও মুসুর ডালে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তাল্পতা রোধ করে এবং হার্ট ও ত্বকের জন্য উপকারী, তবু কিছু বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।
১. উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড রোগীরা
মুসুর ডালে পিউরিন নামক উপাদান থাকে, যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়। ফলে গেঁটেবাত বা জয়েন্টে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
২. কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা
এই ডালে থাকে অক্সালেট, যা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে। কিডনির রোগীদের খাদ্যতালিকা থেকে মুসুর ডাল বাদ দেওয়া নিরাপদ।
৩. অ্যাসিডিটির রোগীরা
মুসুর ডালে থাকা বেশি পরিমাণে ফাইবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যারা অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাসে ভোগেন।
৪. ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা
যেহেতু এটি প্রোটিনসমৃদ্ধ, অতিরিক্ত খেলে তা অতিরিক্ত ক্যালোরি ও ফ্যাটে রূপান্তরিত হতে পারে। তাই পরিমাণমতো খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।
৫. অ্যালার্জি প্রবণ ব্যক্তিরা
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে মুসুর ডাল থেকে অ্যালার্জি হতে পারে, যার ফলে দেখা দেয় চুলকানি, গ্যাস, ফোলাভাব বা হজমজনিত ব্যথা।
চিকিৎসকরা মনে করেন, স্বাস্থ্যকর খাদ্য যেমন উপকারী, তেমনি ভুল খাদ্য নির্বাচন হতে পারে মারাত্মক বিপদের কারণ। তাই ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা বা গেঁটেবাত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুসুর ডাল খাওয়া উচিত নয়।
সায়মা ইসলাম