ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশে শ্রেষ্ঠ: বসবাসের জন্য বিশ্বসেরা ১০ স্থিতিশীল শহর

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:০৫, ২৩ জুন ২০২৫

স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশে শ্রেষ্ঠ: বসবাসের জন্য বিশ্বসেরা ১০ স্থিতিশীল শহর

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের কোন কোন শহরে বসবাস সবচেয়ে আরামদায়ক ও মানসম্মতসেই তালিকাই সম্প্রতি প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (EIU)। ‘গ্লোবাল লিভঅ্যাবিলিটি ইনডেক্স ২০২৫’-এ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দিক: স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামো। চলতি বছরের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, স্থিতিশীলতা কিছুটা কমেছে অনেক শহরে, তবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার দিক থেকে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বিশ্বজুড়ে।

কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক (স্কোর: ৯৮.০)

২০২৫ সালে তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন। শহরটি অবকাঠামো, শিক্ষা ও স্থিতিশীলতার দিক থেকে পেয়েছে সর্বোচ্চ নম্বর। যদিও এখানকার জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলক বেশি, তবুও সার্বজনীন সুবিধা, সাইকেলবান্ধব সংস্কৃতি এবং সম্প্রদায়কেন্দ্রিক জীবনধারা শহরটিকে করেছে বিশেষভাবে বাসযোগ্য।

ভিয়েনা, অস্ট্রিয়া (স্কোর: ৯৭.১)

টানা তিন বছর শীর্ষে থাকার পর এবার দ্বিতীয় স্থানে নেমেছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। শিক্ষা ও অবকাঠামোয় শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখলেও সাম্প্রতিক কিছু নিরাপত্তাজনিত ঘটনার কারণে স্থিতিশীলতার স্কোর কিছুটা কমেছে।

জুরিখ, সুইজারল্যান্ড (স্কোর: ৯৭.১)

ভিয়েনার সঙ্গে সমান স্কোর পেয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ। শহরটি নাগরিক সুযোগ-সুবিধা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যতিক্রমী সমন্বয় ঘটিয়েছে। যদিও এর চেহারা বেশ রূঢ়, তবে তরুণ প্রজন্মের সৃজনশীলতা শহরটিকে প্রাণবন্ত রেখেছে।

মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া (স্কোর: ৯৭.০)

অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে মেলবোর্ন এবার সবার ওপরে। শিল্প-সংস্কৃতি, শিক্ষার মান এবং বাসযোগ্য পরিবেশের জন্য বরাবরই আলোচনায় থাকে এই শহর। শহরের রাস্তাঘাট, কফি সংস্কৃতি ও খোলা পরিবেশ জীবনযাত্রাকে করে তুলেছে স্বাচ্ছন্দ্যময়।

জেনেভা, সুইজারল্যান্ড (স্কোর: ৯৬.৮)

আল্পস পর্বতমালার পটভূমিতে গড়ে ওঠা জেনেভা আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। শহরটির শক্তিশালী অবকাঠামো ও স্থিতিশীল পরিবেশ একে পেশাদার ও পারিবারিক জীবনের জন্য এক অনন্য গন্তব্যে পরিণত করেছে। তবে এটি তালিকার অন্যতম ব্যয়বহুল শহরও।

সিডনি, অস্ট্রেলিয়া (স্কোর: ৯৬.৬)

প্রাকৃতিক সমুদ্রতট, উন্নত অবকাঠামো এবং রৌদ্রোজ্জ্বল জীবনধারাএই তিনের মেলবন্ধনে সিডনি তার আগের বছরের অবস্থান ধরে রেখেছে। শহরের আধুনিকতা ও প্রকৃতির সংমিশ্রণ একে করে তুলেছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়।

ওসাকা, জাপান (স্কোর: ৯৬.০)

জাপানের অন্যতম প্রাণবন্ত শহর ওসাকা এবছর স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় শতভাগ নম্বর পেয়েছে। সুসংগঠিত শহর পরিচালনা, এবং বিশ্বখ্যাত খাবারের সংস্কৃতি একে করে তুলেছে সবচেয়ে বাসযোগ্য জাপানি শহরগুলোর একটি।

অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড (স্কোর: ৯৬.০)

নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, খাদ্য সংস্কৃতি এবং উন্নত অবকাঠামোর জন্য নজর কেড়েছে। শহরটি যারা শহুরে আধুনিকতার পাশাপাশি প্রকৃতির সান্নিধ্য চান, তাদের জন্য আদর্শ।

অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া (স্কোর: ৯৫.৯)

টপ টেনে আবার ফিরে এসেছে অ্যাডিলেড। স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় পেয়েছে পূর্ণ নম্বর। সমুদ্রসৈকত, আঙ্গুরক্ষেত এবং শান্ত জীবনযাপনের জন্য পরিচিত এই শহরটি উচ্চমানের জীবনযাপনের সুযোগ দেয়।

ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা (স্কোর: ৯৫.৮)

এক ধাপ পিছিয়ে গেলেও ভ্যাঙ্কুভার এখনো আকর্ষণ ধরে রেখেছে। শহরটি শিক্ষা ও পরিবেশে শীর্ষ নম্বর পেয়েছে। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার সুযোগ এবং আধুনিক শহুরে সুবিধার সংমিশ্রণে এটি বহির্বিশ্বের মানুষদের কাছে একটি স্বপ্নের শহর।

২০২৫ সালের গ্লোবাল লিভঅ্যাবিলিটি ইনডেক্স স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, বিশ্বের উন্নত শহরগুলো এখন শুধু আর্থিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করছে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ ও স্থিতিশীলতাএই মানবিক সূচকগুলোই একটি শহরকে সত্যিকার অর্থে বসবাসযোগ্য করে তুলছে।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 

রাকিব

×