ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানের রাডারে ধরা পড়েনি বি-২ বোমারু বিমান! কী আছে ভয়ংকর এই বিমানে?

প্রকাশিত: ১৩:২৭, ২৩ জুন ২০২৫

ইরানের রাডারে ধরা পড়েনি বি-২ বোমারু বিমান! কী আছে ভয়ংকর এই বিমানে?

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের গভীরে ঢুকে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের হোয়াইটম্যান ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমান একটানা ৩৭ ঘণ্টা আকাশে উড়ে গোপনে প্রবেশ করে ইরানের আকাশসীমায়। এর পরপরই ফরদৌ, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু কেন্দ্রে চালানো হয় নজিরবিহীন হামলা।

শুধু ফরদৌ কেন্দ্রেই ফেলা হয় ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের ১২টি বাংকার বিধ্বংসী বোমা। আর সাবমেরিন থেকে ছোঁড়া হয় আরও ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। অথচ এসব হামলার আগ পর্যন্ত ইরানের রাডার সিস্টেম বুঝতেই পারেনি, মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে ‘ধ্বংসের কালো ছায়া’—বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমান!

কী আছে এই অদৃশ্য মরণমেশিনে?

কোল্ড ওয়ারের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা ভেদ করতে পারমাণবিক অস্ত্র নিক্ষেপের জন্য তৈরি হয় বি-২ বোমারু বিমান। ১৯৮৯ সালে প্রথম আকাশে ওড়া এই বিমানে নেই কোনো লেজ বা পাখা—পুরোটাই ফ্লাইং উইং কাঠামো। যার কারণে রাডারে প্রতিফলিত হয় না কোনো সিগন্যাল।

বিমানটির শরীর জুড়ে রয়েছে রাডার প্রতিরোধী আবরণ, যা একে রাডার অদৃশ্য করে তোলে। এমনকি ইঞ্জিনের তাপ বা কন্ট্রেইলও যাতে শত্রুপক্ষ বুঝতে না পারে, সে জন্য রয়েছে বিশেষ হিট-মাস্কিং প্রযুক্তি ও স্বয়ংক্রিয় সতর্কবার্তা ব্যবস্থা।

এককথায় ‘ভাসমান আতঙ্ক’

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও গোপনীয় এই বোমারু বিমান একটানা উড়তে পারে ৪৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। প্রয়োজন হলে আকাশ থেকেই জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারে। প্রতিটি বিমানের দাম প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য—এই বিপজ্জনক যুদ্ধযানে নেই কোনো প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র। কারণ শত্রু বুঝতেই পারে না—এটি কখন মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

শুধু ভয়ংকর নয়, বি-২ স্পিরিট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক প্রতিরক্ষার ত্রিমুখী কাঠামোর অন্যতম স্তম্ভ। এতদিন যে অস্ত্র গোপনে রাখা হয়েছিল, এবার সেই অস্ত্র ব্যবহার করে ইরানের পরমাণু পরিকাঠামোতে প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা?

বিশ্লেষকদের মতে, এই আক্রমণ শুধু একক কোনো হামলা নয়—বরং সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে জড়ানোর ইঙ্গিত। আর ইসরায়েলকে রক্ষায় এমন ভয়াবহ অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন খুলে দিয়েছে নতুন এক সামরিক দ্বন্দ্বের দুয়ার।

আসিফ

×