
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের গাজায় সামরিক আগ্রাসনের জেরে বিশ্বের নানা দেশে মার্কিন পণ্যের বিরুদ্ধে যে বর্জনের ঢেউ উঠেছে, তা এবার পৌঁছেছে ইউরোপের দেশ ডেনমার্কে। বিশেষ করে মার্কিন ব্র্যান্ড কোকা-কোলার বিরুদ্ধে ড্যানিশ ভোক্তাদের মধ্যে বয়কটের প্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধান বেভারেজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কার্লসবার্গ।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে কার্লসবার্গের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাকব অ্যারাপ অ্যান্ডারসেন বলেন, ‘ডেনমার্কে কোকা-কোলার বিক্রি কিছুটা কমে গেছে। স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীরা বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে।’ কার্লসবার্গ ডেনমার্কে কোকা-কোলা এবং পেপসির বোতলজাতকরণের দায়িত্বে রয়েছে।
অ্যারাপ-অ্যান্ডারসেন জানান, কেবল কোক নয়, সামগ্রিকভাবে মার্কিন ব্র্যান্ডগুলোর প্রতি এক ধরনের ‘ভোক্তাবর্জন’ চলছে। এর পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি, ট্রাম্পের রাজনৈতিক বিবৃতি, এমনকি ইলন মাস্কের কর্মকাণ্ড। তিনি বলেন, ‘এটি এখন কেবল একটি পণ্য নয়, বরং একটি অবস্থান প্রকাশের মাধ্যম।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, কোকা-কোলার বিক্রির হার কমে যাওয়া মূলত ফিলিস্তিন সংকট ঘিরে মুসলিম দেশগুলোতে শুরু হওয়া বয়কটের ধারাবাহিকতা। আগেও পাকিস্তান, মিশরসহ অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে কোকের বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছিল। এখন সেই ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপেও।
ডেনমার্কে কোকের বিকল্প হিসেবে স্থানীয় ‘জলি কোলা’ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদিও কার্লসবার্গ দাবি করছে, কোক ও পেপসি—দুটিই ড্যানিশ ব্রুয়ারিগুলোতে তৈরি হয় এবং স্থানীয় শ্রমিকেরাই এগুলোর উৎপাদনে নিয়োজিত, তাই এগুলো অনেকটাই ‘ডেনিশ ব্র্যান্ড’ হিসেবেই বিবেচিত হওয়া উচিত।
তবে কোকা-কোলা এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। কোকের গ্লোবাল সিইও জেমস কুইন্সি বলেন, কোম্পানি বর্তমানে বয়কটের নেতিবাচক প্রভাব থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে, একটি বিতর্কিত ভিডিওতে লাতিন কর্মীদের ছাঁটাই ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করার অভিযোগ ওঠায় কোক এখন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতেও হিস্পানিক ভোক্তাদের বর্জনের মুখে পড়েছে। যদিও কোম্পানি ভিডিওটিকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে।
কার্লসবার্গের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কোনো বর্জন আন্দোলনের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়; বরং তারা ভোক্তাদের স্বাধীন সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়।
সূত্র: রয়টার্স
রাকিব