
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা, প্রশিক্ষণ, লাইসেন্স এসবের কিছুই মানছে না অটোরিক্সার চালক ও তার মালিকরা। তারা শহরটাকে অচলাবস্থায় পর্যবসিত করে তুলেছেন। তাদের আন্দোলনের কোনো ধরনের যৌক্তিকতা না থাকলেও সড়কজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আন্দোলন চালানোর কারণে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত ভয়াবহ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। তাদের আন্দোলনে অনেক পুলিশ সদস্যও আক্রান্ত হয়েছে। তবে তাদের নৈরাজ্যের কারণে সাধারণ মানুষ সড়কে নেমে তাদের প্রতিহত পর্যন্ত করতে দেখা গেছে। অটোরিক্সার সবচেয়ে বেশি গ্যারেজ ও কারখানা রয়েছে বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী ও রায়েরবাগ এলাকায়। তবে বড় বড় অটোরিক্সার ফ্যাক্টরি রয়েছে গাজীপুরে। ষেখান থেকে ঢাকার শোরুমে গাড়ি আসে। কোনো ধরনের লাইসেন্স এবং সিটি করপোরেশনের অনুমতি ব্যতিরেকেই অবলীলায় চলছে এহেন কর্মকাণ্ড। কমলাপুর স্টেডিয়াম এলাকায় বিশাল শোরুম গড়ে তোলা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিদিনই শত শত অটোরিক্সা দেশের প্রত্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যাঙের ছাতার মতো অটোরিক্সা একদিকে যেমন সড়ক ও মহাসড়কের জন্য বিপদ ডেকে আনছে তেমনি দুর্ঘটনার জন্য অটোরিক্সাও এগিয়ে রয়েছে। প্রতিদিন যত ধরনের দুর্ঘটনার সৃষ্টি হচ্ছে তার মধ্যে অটোরিক্সাই বেশি দুর্ঘটনায় কবলিত হচ্ছে। তবে সড়কে থাকা ট্রাফিক পুলিশের অভিযোগের অন্ত নেই। তারা বলেন, অটোরিক্সা ডানে বামে ঘুরাতে গেলেই বিপত্তিতে পড়তে হয় পেছনে থাকা গাড়িকে। ইনডিকেটর না থাকায় কোনো দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে মোড় নেবে তা পেছনের গাড়ি জানতে পর্যন্ত পারছে না। তাতেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। আবার যানজট সৃষ্টি হওয়ায়ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। শুধু ঢাকা শহরেই পায়েচালিত রিক্সাই রয়েছে ১৫ লাখের বেশি। দিন দিন অটোরিক্সার নৈরাজ্যের কবলে ব্যস্ততম সড়কগুলোকে তীব্র যনজটে নাকাল হতে হচ্ছে। অফিসগামী এবং অ্যাম্বুলেন্স সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে। এতদিন শহরের লিংকরোড ব্যবহার করলেও অটোরিক্সা এখন ব্যস্ততম সড়কে চালানোর জন্য তাদের আন্দোলন রীতিমতো শুধু অন্যায়ই নয় এটা বড় ধরনের অপরাধের শামিলও বলা চলে। পায়েচালিত রিক্সা পরিবেশবন্ধব হলেও অটোরিক্সা দেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের বড় একটা অংশ গিলে খেয়ে ফেলছে। তাতে করে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে দেশবাসীকে। তবে বেশিরভাগ অটো গাড়ির চার্জের বিদ্যুৎ লাইন অবৈধ। একটি দেশের সড়কের পরিকাঠোমো যদি এভাবে লাইসেন্সবিহীন গাড়ির দখলে চলে যায় তাতে নৈরাজ্যে ভয়াবহতার দিকে যাবে এটাই স্বাভাবিক। এর লাগাম যদি এখনই টানা না যায় তাহলে শহরের সড়কগুলো একেবারে অচলাবস্থা পতিত হতে বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়বে না। তবে এ খাতে মালিক পক্ষের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানেই চলে আন্দোলন এবং নৈরাজ্য। সেদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। মালিক পক্ষের সিন্ডিকেটধারী এসব নেতাকে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না এমনকি আইনের কঠোরতায় শিথিলতা প্রদর্শনও কাম্য নয়।
মুন্সীগঞ্জ থেকে
প্যানেল