
ছবিঃ প্রতীকী অর্থে
কালবৈশাখীর ঝড়ে খুঁটি ও তার ছিঁড়ে পড়ায় নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া, রনচন্ডি, চাঁদখানা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের তিনহাজার গ্রাহক ৪দিন পর বিদ্যুৎ পেয়েছে। অপর দিকে চরম লোড শেডিং এর কবলে পড়া নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের চার গ্রাম চৌধুরীপাড়া, মুন্সিপাড়া, পূর্ব চৌধুরী পাড়ার বিদ্যুৎ গ্রহকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে নীলফামারী সদরের সুটিপাড়াস্থ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন তারা। সেখানে গ্রামের মোতালেব, হালিম মিয়া অভিযোগ করে জানান, রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন নীলফামারী সদর উপজেলা ১৩ নং চড়াইখোলা ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ডের (চৌধুরীপাড়া, মুন্সিপাড়া, পূর্ব চৌধুরী পাড়া) এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ লোডশেডিংয়ের কারণে চরম জনদূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এতে ওই সকল গ্রামের পরিবার হাটবাজার গুলোর মানুষজন সহ শিক্ষার্থী চরম দূর্ভোগ পড়েছে। গ্রামবাসী তাদের এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা বিবেচনায় এবং গ্রাহকদের সুবিধার্থে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন থেকে তিন গ্রামের গ্রাহকদের নীলফামারী পল্লী বিদ্যুতের আওতায় সংযোগ স্থানান্তরিতের দাবি করেন।
অপরদিকে গত শনিবার রাত ৯টায় (২৬ এপ্রিল) বজ্রবৃষ্টি সহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে বিদ্যুতের দুটি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে যায়, ছয়টি খুঁটি হেলে পড়ে এবং এক হাজারের বেশি জায়গায় তারের সংযোগ ছিঁড়ে পড়ে। এ ছাড়া বজ্রপাতের কারণে বেশ কিছু ট্রান্সফরমার বিকল, সেকশন ফিউজ ও সংযোগ তার ছিঁড়ে যাওয়ায় এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গ্রাহকরা। গত তিনদিনে মেরামত করে ৫৭ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব হলেও তিনটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের তিন হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারেনি। ওই সকল গ্রামে বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) মাগুড়া ইউনিয়নের পাঠানপাড়া গ্রামের আনিছুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে বিদ্যুতের তার ও পোল ছিঁড়ে পড়ায় গ্রামগুলো অন্ধকারে পড়ে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার সমস্যা সহ দৈনদিন কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পড়ে চরম বিপাকে। হারিকেন, কুপির ব্যবহার অনেক আগে বিলুপ্তি হওয়ায় এখন মোমবাতির উপর ভরসা করতে হয়। ৫ টাকা মূল্যের মোমবাতি কিনতে হয় ১০ টাকা করে। মোবাইলে চার্জ দিতে অন্য এলাকায় যেতে হচ্ছে। কেউ কেউ চার্জার লাইট কিনতে গিয়েও পড়ছে বিড়ম্বনায়। ২০০শত টাকার চার্জার লাইট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
চাঁদখানা ইউনিয়নের নগরবন গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান সিরাজ বলেন, গত চারদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে আমাদের গ্রামের শত শত বাড়িঘর অন্ধকারে পড়ে। এতে চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী গরু ও আসবাবপত্র রক্ষা করতে রাত জেগে ঘরবাড়ি পাহারা দিয়েছে। বুধবার অবশেষে চারদিন পর বিদ্যুৎ পাওয়া গেল।
কিশোরীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসার নুরুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানান, এই উপজেলায় আমাদের ৬০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গত শনিবার রাতে বজ্রবৃস্টি সহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে বিদ্যুতের দুটি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে যায়, ছয়টি খুঁটি হেলে পড়ে এবং এক হাজারের বেশি জায়গায় তারের সংযোগ ছিঁড়ে পড়ে। এ ছাড়া বজ্রপাতের কারনে বেশ কিছু ট্রান্সফরমার বিকল, সেকশন ফিউজ ও সংযোগ তার ছিঁড়ে যাওয়ায় এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গ্রাহকরা। গত দুইদিনে মেরামত করে ৫৭ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব হয়। তবে তিনটি ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রামের তিন হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারিনি তখন। তবে বুধবার সব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে।
ইমরান