
সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল
বর্তমান ভারতের রাজনীতি সরাসরি যুদ্ধ না করলেও সবসময় ‘যুদ্ধদেহী’ মনোভাব পোষণ করে চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মাসুদ কামাল।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারতের রাজনীতি এখন এমন জায়গায় চলে গেছে, যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ রাজনৈতিক কথাবার্তা পাকিস্তানবিরোধিতাকে ঘিরে। কে কত জোরে পাকিস্তানকে গালি দিতে পারে, সেটাই যেন বড় রাজনৈতিক যোগ্যতা হয়ে উঠেছে। মাসুদ কামালের মতে, এই মনোভাব শুধু রাজনৈতিক বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ নেই, বরং মিডিয়া, সিনেমা ও সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এই পাকিস্তানবিরোধিতা আসলে শুধু রাজনৈতিক চাল নয়, এর ভেতরে লুকিয়ে আছে আরও গভীর এজেন্ডা—মুসলিমবিরোধী মনোভাব। সিনেমায় বারবার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নায়ক হিসেবে দেখিয়ে মুসলমানদের সিস্টেমেটিকলি খলনায়কে রূপান্তর করা হচ্ছে।
সাংবাদিক মাসুদ কামাল আরও বলেন, ভারতের বহু রাজ্যে মুসলমান জনগোষ্ঠীর হার ৩০ শতাংশের বেশি, অথচ রাজনৈতিক দলগুলো এখন এমন প্রচারণা চালাচ্ছে, যেখানে এই জনগোষ্ঠীকে ভোটের হিসাবেই রাখা হচ্ছে না। তিনি বলেন, বিজেপি এসব ঝুঁকি নিয়েও বারবার নির্বাচনে জয়ী হচ্ছে, কারণ তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের (৬৫-৭০%) মধ্যেও মুসলিমবিরোধী এক প্রবল মনোভাব গড়ে তুলতে পেরেছে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। কিন্তু ওদের এই বিদ্বেষমূলক রাজনৈতিক প্রবণতার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়তে পারে। বাংলাদেশে মুসলমান সংখ্যা গরিষ্ঠ হওয়ায়, ভারতের এই মনোভাবের রিভার্স রিএকশন আমাদের সমাজেও তৈরি হতে পারে—যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, এই পুরো বিষয়টি ধর্ম নয়, বরং নিছক রাজনৈতিক লাভের কৌশল। কে কতটা মুসলিমবিদ্বেষী হতে পারে, কে কতটা পাকিস্তানকে অপমান করতে পারে, সেটাই এখন নির্বাচনী প্রচারণার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিন যদি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হয়, আমি অবাক হব না।
এসএফ