
ছবি: সংগৃহীত
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় সাম্প্রতিক সশস্ত্র হামলার পর অঞ্চলজুড়ে এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিম জনগণের বিরুদ্ধে গণগ্রেফতার, দমন-পীড়ন ও বসতবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। ঘটনাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলায় ১৫ বছর বয়সী এক মুসলিম কিশোরকে মারধর ও পাকিস্তানের পতাকায় প্রস্রাব করতে বাধ্য করার অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ তথ্য জানায়।
গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এক স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদির এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে স্থানীয় পুলিশের বরাতে বলা হয়, অভিযুক্তরা হলেন রাকেশ ওরফে রাজু (একটি বইয়ের দোকানের মালিক), নিতিন (এক মুদির দোকানদার) এবং আরও একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। বান্না দেবী থানায় ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ আইনে দাঙ্গা, ইচ্ছাকৃত আঘাত, শান্তিভঙ্গ, হুমকি প্রদান ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সোমবার শহরে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদের সময় রাস্তায় পাকিস্তানের পতাকা ফেলা ছিল, যার নিচে লেখা ছিল ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’। সে পথে স্কুল থেকে ফেরার সময় নবম শ্রেণির ওই কিশোর পতাকাটি তুলে নেয়। তখন বিক্ষোভকারীরা তাকে ঘিরে ধরে এবং মারধর করে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, তারা কিশোরটিকে ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিতে বাধ্য করে এবং তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ছেলেটিকে পতাকায় প্রস্রাব করতে বলা হচ্ছে।
অভিযোগকারী আব্দুল কাদির ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, ‘রাজু ও নিতিন কিশোরটিকে মারধর করছে এবং মুসলিম সম্প্রদায়কে গালিগালাজ করছে। এতে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। এ ঘটনা শহরের শান্তি নষ্ট করেছে। অভিযুক্তরা কয়েক ডজন লোক নিয়ে রাস্তায় মুসলিমদের ওপর হামলা করেছে।’
বান্না দেবী থানার এসএইচও পঙ্কজ কুমার মিশ্র বলেন, ‘কিশোরটি রাস্তায় পড়ে থাকা পতাকাটি তুলেছিল। প্রতিবাদকারীরা তাকে পতাকাটি ফের রেখে দিতে বলে এবং এরপর তাকে প্রশ্ন করে, সে প্রতিবাদের সঙ্গে কীভাবে সংহতি জানাবে। তখনই তারা তাকে প্রস্রাব করতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ।’
আব্দুল কাদির তার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, নিতিন ও রাজু এর আগেও হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে
রাকিব