ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে যাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব

নিরঞ্জন রায়

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৪ এপ্রিল ২০২৩

দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে যাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্বে রাজনৈতিক সংকট

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্বে রাজনৈতিক সংকট যত না প্রকট হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি প্রকট হয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। রাজনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ভয়াবহতা বিশ্বব্যাপী এতটাই ব্যাপক যে, উন্নত-অনুন্নত সকল দেশ এই সংকটের ভুক্তভোগী। উন্নত বিশ্ব এই রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় লড়ে চলেছে। তারা যে এর প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত তার প্রমাণ পাওয়া গেল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক ক্রেডিট সুইস ধসে পড়ার মধ্য দিয়ে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের কারণ অনেক পেছনের। ১০৯০-২০১০ সময়কালে রাশিয়া ইউরোপ এবং এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সফল ব্যবসা করে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করে এবং রাশিয়ার অনেক ধনকুবের জন্ম হয়। ফলে রাশিয়া পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নতুন বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয়। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠে বি-আর-আই-সি-এস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চীন এবং সাউথ আফ্রিকা) অর্থনৈতিক জোট গঠিত হওয়ার কারণে। 
২০১৪ সালের দিকে ক্রিমিয়াকে কেন্দ্র করে দেখা দেয় সমস্যা। সেই সুযোগে রাশিয়া বিলম্ব না করে ক্রিমিয়া সংযুক্ত করে নেয়। প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে আমেরিকা এবং পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার অনেক ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়ার বাণিজ্যের প্রসার থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর ফলে রাশিয়া নতুন করে অনুধাবন করে যে, সামরিক শক্তিতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন না করে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে তারাও সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করে। এদিকে রাশিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন রাষ্ট্র ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভে মরিয়া হয়ে ওঠে, যা রাশিয়া মোটেই ভালোভাবে নেয়নি। পরিণামে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।

ইউক্রেন আক্রমণের অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব যে ধরনের অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছে তাতে রাশিয়া কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা কষ্টকর। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় পশ্চিমা বিশ্বই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনীতি চরম সংকটে পড়েছে। রাশিয়ার মুদ্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে, অথচ ইউএস ডলার ছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের সকল দেশের মুদ্রার দরপতন হয়েছে। আমেরিকার একাধিক ব্যাংকের পতন তো ইতোমধ্যেই হয়েছে, আরও অনেক ব্যাংক সংকটের মধ্যে আছে বলে জানা গেছে।

এমনকি ইউরোপের বৃহৎ ব্যাংকগুলোও সংকটে পড়তে শুরু করেছে। অথচ রাশিয়ার কোনো ব্যাংক ধসে পড়ার খবর এখনো জানা যায়নি। রাশিয়া একটি পরাশক্তি, তাকে সাময়িক সমস্যায় ফেলা যেতে পারে, কিন্তু কাবু করা এতটা সহজ কাজ নয়। পশ্চিমা বিশ্ব এই বাস্তবতা বুঝতে পারেনি অথবা তাদের হিসাব-নিকাশে অনেক গরমিল  রয়ে গেছে। তারা তাদের সকল প্রকার অর্থনৈতিক অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়াকে শায়েস্তা করতে গিয়ে নিজেরাই এখন এক দীর্ঘমেয়াদি সংকটের মুখে। 
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। অথচ চীন-তাইওয়ান সংকট নতুন মাত্রা পেয়েছে।  এক সময় চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বাইরে ছিল। আমেরিকাই চীনকে বিশ্ব বাণিজ্যে নিয়ে এসে তাদের বাণিজ্য অবারিত করে দেয়। উদ্দেশ্য ছিল অন্য কোনো বৃহৎ এবং উদীয়মান দেশ যেন শক্তিশালী অর্থনীতি হয়ে দাঁড়াতে না পারে। এখানেও ফর্মুলাটি সেভাবে কাজ করেনি। বরং বলা যায় উল্টো ফল হয়েছে। চীন বিশ্ব বাণিজ্যের এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে দারুণভাবে।

সমগ্র বিশ্বের বাজার, এমনকি আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের বাজার চীনের তৈরি স্বল্প মূল্যের পণ্যসামগ্রীতে সয়লাব হয়ে যায়। চীনে উৎপাদিত সস্তা পণ্যসামগ্রীর সুযোগটি বেছে নেয় আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের অনেক কোম্পানি অধিক মুনাফা অর্জনের আশায়। অ্যাপেলের যে আইফোন সেট আমেরিকা-কানাডার বাজারে বিক্রি হয় দেড় হাজার ডলার মূল্যে, সেই ফোনসেট তারা চীন থেকে সংগ্রহ করে নামমাত্র মূল্যে। একই অবস্থা আমাজানসহ অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রেও।

এর ফলে মধ্যস্বত্ব মুনাফার পরিমাণ এত বেশি যে, অ্যাপেল, আমাজানের মতো কোম্পানিগুলো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং মুনাফা অর্জনকারী কোম্পানিতে পরিণত হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চীন বিগত দুই দশকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়, যা পশ্চিমা বিশ্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কারণেই ইউক্রেনের মতো তাইওয়ান সমস্যাও সামনে চলে আসে। আমেরিকা ভালো করেই চীন-তাইওয়ান বৈরী সম্পর্কের বিষয়টি জানে।

তারপরও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকা সত্ত্বেও আমেরিকার কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি প্যালোসিসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আকস্মিক তাইওয়ান সফর করেন, যা চীন মোটেই ভালোভাবে নেয়নি এবং এক পর্যায়ে চীন-তাইওয়ান যুদ্ধ প্রায় শুরু হওয়ার উপক্রম ঘটে। চীন কিছুটা দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে তাইওয়ান আক্রমণ থেকে বিরত থাকলেও তাইওয়ান নিয়ে আগামী দিনে আমেরিকা কেমন আচরণ করবে তা চীন খুব ভালোভাবেই আঁচ করতে পারে। এ কারণেই চীন অধিক মাত্রায় রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে বসে।

সম্প্রতি চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে গেছে বিষয়টি। পশ্চিমা বিশ্বের নীতি যেভাবে বিশ্বের দুই পরাশক্তি রাশিয়া এবং চীনকে এক কাতারে এনে দিয়েছে সেটা আগামী বিশ্ব অর্থনীতির জন্য কতটা ভালো হবে তা ভবিষ্যৎই বলতে পারবে। 
মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা আমাদের সবারই জানা। ইরাক-ইরান যুদ্ধ, ইরাকের কুয়েত আক্রমণের সুযোগে আমেরিকার ইরাকের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া এবং কথিত জনবিধ্বংসী অস্ত্র রাখার অভিযোগে সাদ্দাম হোসেনের সরকারকে উৎখাত করা এবং সর্বশেষ সিরিয়ার ঘটনা আমাদের সবারই জানা। হতভাগ্য ফিলিস্তিনিরা আজও অকাতরে প্রাণ দিয়ে চলেছে। তাদের নিজেদের আবাসভূমির স্বপ্ন কবে পূরণ হবে বা আদৌ হবে কিনা, তা কেউ জানে না।

দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তিধর দেশ সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। আমেরিকার সঙ্গে সৌদি আরবসহ অনেক দেশের মধুর সম্পর্ক আছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বিনিয়োগও আছে আমেরিকায়। তারপরও আমেরিকা সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারেনি। উল্টো আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তাকে একঘরে করে ফেলেছে। এমনকি তুরস্কে এক সাংবাদিক হত্যার পেছনে সৌদি যুবরাজের হাত থাকার অভিযোগ করায় সৌদি আরবও সমস্যায় পড়ে যায়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা সৌদি যুবরাজকে এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সৌদি আরবকে কাছে টানার চেষ্টা করেও সেভাবে সফল হতে পারেনি। এর প্রমাণ পাওয়া গেল চীনের মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে সৌদি আরব এবং ইরানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে। একই রকম সম্পর্ক খুব সহসাই হয়ত সিরিয়ার সঙ্গেও স্থাপিত হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যকার বিরোধ সরিয়ে রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূচনা এক যুগান্তকারী ঘটনা, যা আগামী দিনের মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির ধারণাই পাল্টে দিতে পারে।

নতুনভাবে বন্ধুত্বের সম্পর্কে গড়ে ওঠা সৌদি আরব এবং ইরানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্য রাশিয়া এবং চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে, যার লক্ষণ একেবারেই দৃশ্যমান।
একদিকে রাশিয়া-চীন সম্পর্কের নতুন মাত্রা, আরেকদিকে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে নতুন বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় তাদের নেতৃত্বে পুরো মধ্যপ্রাচ্য রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা। ভারতের সঙ্গে বরাবরই রাশিয়ার সুসম্পর্ক আছে এবং ভারত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পরোক্ষভাবে রাশিয়ার পক্ষেই আছে। আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ভালো ব্যবসাও করছে।

চীনের সঙ্গে ভারতের কিছু সমস্যা আছে। কিন্তু রাশিয়া-চীন সম্পর্ক যদি সত্যিকার অর্থেই শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে যায় তাহলে তাকে স্থায়ী রূপ দিতে চীন-ভারত সুসম্পর্কও নিশ্চিত করতে হবে এবং আগামীতে সেদিকে যাওয়ার সম্ভাবনাই আছে। কোনোভাবে যদি কার্যকর একটি চীন-ভারত অনাক্রমণ চুক্তি করে ফেলতে পারে তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
বাংলাদেশও এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ নেই। বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ এখন নতুন অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশও বিশ্বের সব শক্তিমান দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ আমেরিকা, চীন, ভারত, রাশিয়া সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও সিএনএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেই উল্লেখ করেছেন।

সব মিলিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে রাশিয়া, চীন এবং ভারত একজোট হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা ইতোমধ্যে বি-আর-আই-সি-এস জোটের মধ্যেই নিহিত আছে। এই জোট গঠিত হলে বিশ্ব অর্থনীতির এক নতুন মেরুকরণ হবে। কেননা, চীনের আছে প্রযুক্তি এবং শক্ত ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রাশিয়ার আছে সম্পদ এবং সমরাস্ত্র। আর ভারতের আছে মেধা। তার চেয়েও বড় কথা মধ্যপ্রাচ্যসহ এতদাঞ্চলে আছে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জনগোষ্ঠী, যা একটি বিশাল বাজার। 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বের গৃহীত নীতি রাশিয়া, চীন, ভারত, সৌদি আরব এবং ইরানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যকে জোটবদ্ধ হতে বাধ্য করেছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশকেও আমেরিকা অহেতুক কিছু নিষেধাজ্ঞা এবং মানবাধিকারের প্রসঙ্গ এনে চাপের মধ্যে রাখতে শুরু করেছে। এই অবস্থা ভালো কি মন্দ সেই বিতর্কে না গিয়েও এ কথা বলা যেতে পারে যে, পশ্চিমা বিশ্ব যদি তাদের বৈশ্বিক নীতি ও কৌশল পরিবর্তন না করে তাহলে আগামী দিনের বিশ্ব অর্থনীতির যে নতুন মেরুকরণ হবে তা তাদের নিজেদের জন্যও ভালো হবে না।

অন্য দেশের জন্যও ভালো হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে কথায় কথায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং মানবাধিকারের অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা প্রয়োজন। এই অস্ত্র অপব্যবহারের কারণে ভোঁতা হয়ে গেছে এবং এখন এটি আর সেভাবে যে কাজ করে না তা তো ইতোমধ্যেই প্রমাণিত। এটা তো খুব স্বাভাবিক, যে নিষেধাজ্ঞা একদিকে উত্তর কোরিয়া, ইরান, রাশিয়ার ওপর আরোপ করা হয়েছে সেই একই অস্ত্র বাংলাদেশে জঙ্গি সন্ত্রাস দমন এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে সফল র‌্যাবের ওপরও আরোপ করা হয়েছে। এরকম ঢালাও ব্যবহার বা অপব্যবহারের কারণেই নিষেধাজ্ঞা এবং মানবাধিকারের অস্ত্র আর সেভাবে কাজ করে না এবং আগামীতে আরও করবে না।

যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তাদের কোনো সমস্যা হয় না এবং তারা ঠিকমতোই চলতে পারে। মাঝখান থেকে বিশ্ববাণিজ্য স্বাভাবিকতা হারায়। যার খেসারত দেয় উন্নত-অনুন্নত সকল দেশের জনগণ, যারা এই যুদ্ধের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়। এই কথাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ফোরামে স্পষ্ট করেই তুলে করেছেন। তাই এসব নীতি ও কৌশল আপাতত সরিয়ে রেখে অনতিবিলম্বে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ এবং সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার ব্যবস্থা করে বিশ্বে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। তা না হলে পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে পারে এবং সেইসঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির সংকটও দীর্ঘ হতে পারে। 

লেখক : সার্টিফাইড অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং স্পেশালিস্ট ও ব্যাংকার
টরন্টো, কানাডা

[email protected]

×